কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানায় সদর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ও জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধা মো. রফিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে কোন রকম তদন্ত ছাড়া মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটকের ঘটনায় স্থানীয় শত শত নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরের দিকে টেকনাফ মডেল থানার সামনে এ কর্মসূচি করেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় শত শত নারী-পুরুষ।
মামলার আসামীরা হলেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নে গোদারবিলের মোজাহের মিয়া ছেলে বশির উল্লাহ (৩০), একই ইউনিয়ন নতুন পল্লান পাড়ার মোক্তার আহমেদের ছেলে মো. রফিক (৩৫), মাওলানা নুর আহমেদের ছেলে আব্দুল মাজেদ (৪৫), মৃত মোস্তফা আহমেদের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩০), মৌলভী নুর আহমেদের ছেলে আবুল খায়ের (৬৫) ও মনিকের ছেলে আবু তাহের (৪৫)।
মো. রফিক বলেন, ‘মামলার বাদী টেকনাফ পৌরসভা কেকে পাড়া ও পুরাতন রোহিঙ্গা নারী ফেরদৌস আকতারের সঙ্গে গোদাবিলের বাসিন্দা মোজাহার মিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে এবং তাদের মধ্যে ঘটনা হয়েছে। এ ঘটনায় ফেরদৌস আকতারের ছেলে মো. রফিককে মারধর করে মোজাহার মিয়া ধরে নিয়ে গেলে পরে স্থানীয় মহিলা মেম্বার ও সদরের চেয়ারম্যান তাকে উদ্ধার করে পুলিশকে বুঝিয়ে দিয়েছে। সেটা স্থানীয় মহিলা মেম্বার আমাকে জানালে বিষয়টি আমি এতটুকু জানি। গত ১৫ অক্টোবর যেদিন ঘটনা হলো সেদিন যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে একটি মিটিং ছিলো আমি সেখানে ছিলাম। এ ঘটনার পরে কোন রকম তদন্ত না করে তড়িঘড়ি চালিয়ে আমিসহ আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে ওই মহিলার কথায় গত ১৬ অক্টোবর টেকনাফ থানায় মামলা রুজু করে ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলায় টেকনাফ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মধ্যরাতে আমার তিনজন আত্মীয়কে আটক করে নিয়ে যায়। অথচ এই মামলার এক নাম্বার আসামীকে আটক করা হয়নি। আমাকে ২ নম্বর আসামী করা হলো, আমাদের বিষয়ে কোন রকম তদন্ত ছাড়া ওসি যে মামলা নিল, তা দেখে আমরা অবাক।’
‘ওসি একটি ষড়যন্ত্রকারী মহলকে খুশি করতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এ রকম একটা মিথ্যা মামলা নিয়েছেন।’
টেকনাফ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জুনায়েদ আলী চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী দুঃশাসনের ইন্ধনে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. রফিকসহ বহু নিরীহ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল রাতে মামলার পরে মঙ্গলবার ভোরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় আটক ও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়; যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ও লজ্জাজনক।’
‘মো. রফিক দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামী সৈনিক, একজন জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধা। তার মতো নিবেদিত রাজনৈতিক কর্মীর বিরুদ্ধে এই হয়রানি শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নয়, এটি গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত। টেকনাফ উপজেলা যুবদলের পক্ষ থেকে আমরা এই অবৈধ মামলা, হয়রানি ও আটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটক নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
আটক আব্দুল মজিদের ভাই আরিফ উল্লাহ জানান, ফেরদৌস আকতারের ছেলের সঙ্গে যার ঘটনা হয়েছে তাকে হয়রানি না করে গোপনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানার ওসি মামলা রুজু করে ঐ মহিলাকে খুশি করেছেন। এ মামলায় আমার ভাই আব্দুল মজিদ, আবু তাহের ও জাহাঙ্গীর আলমকে রাতে ধরে নিয়ে এসেছে থানায়।’
জানতে চাইলে উখিয়া ও টেকনাফে সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল হাসান এ বিষয়ে কোন কিছু জানেন না বলে জানান।
কেকে/ এমএ