খাগড়াছড়িতে যে মারমা কিশোরী দলবদ্ধ ‘ধর্ষণের’ শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনে ‘ধর্ষণের কোনো আলামত পাননি’ বলে জানিয়েছেন পরীক্ষায় নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ধর্ষণের আলামত পরীক্ষায় তিন চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দেওয়া খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক জয়া চাকমা বলেছেন, ‘আমরা মেডিকেলে রির্পোট জমা দিয়েছি। সবধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি। কিন্তু আসলে ধর্ষণের কোনো আলামত পাইনি।’
এই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদের টিমে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোশারফ হোসেন ও নাহিদা আকতার ছিলেন।’
স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনের কপি গণমাধ্যমের হাতে এসছে। সেখানে আলামত পরীক্ষার ১০টি সূচকের সবকটিতে স্বাভাবিক লেখা রয়েছে।
মারমা এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে বিক্ষোভ ও উত্তেজনা চলছে খাগড়াছড়িতে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে সদর থানায় মামলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন ভোরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর মধ্যে ধর্ষণের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় খাগড়াছড়িতে, যা একসময় সহিংস হয়ে ওঠে।
১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি অতিরিক্ত সেনা ও বিজিবি মোতায়েনের পরও পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। রোববার ১৪৪ ধারার মধ্যেই গুইমারায় ব্যাপক সহিংসতা হয়। সেখানে গুলিতে নিহত হয় তিনজন।
মঙ্গলবার গুইমারায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় সহিংসতার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য দেন জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।
এদিন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব যেন শান্তিপূর্ণভাবে না হতে পারে, সেজন্যই খাগড়াছড়িতে সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
দুর্গাপূজার অষ্টমীতে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী চেষ্টা করেছিল যাতে পূজাটা ভালোভাবে না হয়। সেই সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করে দেওয়া হয়েছে।”
উপদেষ্টা বলেন, “সন্ত্রাসীরা সব জায়গায় চেষ্টা করবে। সন্ত্রাসীদের মদদদাতা দেশের বাইরে রয়েছে।”
খাগড়াছড়ির ধর্ষণ ও সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় কয়েকজনকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কথাও বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
কেকে/এজে