দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে ঘরহীন জীবন কাটিয়েছেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার পানিছড়া গ্রামের অসহায় রেনু বেগম ও তার ছেলে। আশ্রয়হীন জীবনের কষ্ট তাকে করেছে পথের বোঝা, দুঃখ-দুর্দশার ছায়া যেন কোনোদিন ছাড়েনি পিছু। ৩৬ বছর আগে অসুস্থ হয়ে স্বামী মারা যান, সম্পত্তি যা ছিল সব বিক্রি করে স্বামীকে চিকিৎসা করেও বাঁচাতে পারেননি। এরপর থেকে মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে জীবন চালিয়েছেন তিনি। ঘরবাড়ি না থাকায় মানুষের বাড়িতে থাকতে হয়েছে বহুবছর ধরে।
অবশেষে সেই অন্ধকার জীবনে আলো হয়ে আসেন বিয়ানিবাজার মানবিক টিমের পরিচালক জুয়েল আহমদ। মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তিনি উপহার দিলেন পাঁচ শতাংশ জমিসহ একটি টিনশেড ঘর। প্রায় ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ঘর শুধু একটি আশ্রয় নয় বরং রেনু বেগমের জীবনে ফিরিয়ে এনেছে নতুন ভোরের স্বপ্ন। ঘর পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লেন রেনু বেগম। তার চোখের অশ্রু যেন সাক্ষ্য দিচ্ছিল ত্রিশ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। আর এ মহৎ উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মানবিক টিমের প্রবাসী সদস্যরাও।
রেনু বেগম বলেন, আমি দীর্ঘ ৩৬ বছর মানুষের বাসা-বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছি। স্বামী মারা যাওয়ার পর একেবারেই অসহায় হয়ে পড়ি। জীবিত থাকাকালীন উনিও অসুস্থ ছিলেন, সহায়-সম্পদ যা ছিল সব বিক্রি করে তার চিকিৎসা করেও বাঁচাতে পারিনি। আজ এই ঘর পেয়ে আমার মনে হচ্ছে, নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখার মতো কিছু পেলাম। আমি সত্যিই অনেক খুশি।
গতকাল রোববার দুপুরে নতুন ঘরের উদ্বোধন করেন জুয়েল আহমদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটী নাটকে জনপ্রিয় নাট্যকার বেলাল আহমদ মুরাদ, দেশসেরা কনটেন্ট ক্রিয়েটর জুয়েল, মানবিক টিমের সদস্য রোমেল আহমদ, ওলিউর রহমান সাজন, সাহানা সাইফসহ টিমের সদস্যরা।
জুয়েল আহমদ ইতোমধ্যেই দেশে-বিদেশে পরিচিত হয়েছেন মানবিক কাজের জন্য। দেশের বিভিন্ন স্থানে মসজিদ ও মাদরাসা নির্মাণ, টিউবওয়েল স্থাপন কিংবা অসহায়দের ঘর তৈরি প্রতিটি কাজেই তিনি ছড়াচ্ছেন আলোর দিশা।
কেকে/ আরআই