রংপুর বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৫০ লাখ গ্রাহক থাকলেও নেই কোনো বিদ্যুৎ কোর্ট। ফলে, বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যে কোনো মামলা নিষ্পত্তির জন্য গ্রাহকদের যেতে হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। এতে একদিকে যেমন খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে।
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বাসিন্দা নূরুল হুদা নাহিদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৭০ হাজার টাকা বকেয়া বিলের মামলা করে।
নাহিদ জানান, মামলা নিষ্পত্তির জন্য তাকে ঢাকার খিলখেত বিদ্যুৎ কোর্টে যেতে হয়েছে দুই বার। এতে প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। শুধু অর্থনৈতিক নয়, শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তিও পোহাতে হয়েছে তাকে।
একই অভিজ্ঞতা ভুক্তভোগী নয়ন মিয়ারও। মাত্র ১১ হাজার টাকার বকেয়া বিল নিয়ে মামলা করতে গিয়ে তার খরচ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
নয়ন বলেন, ‘যদি রংপুরেই বিদ্যুৎ কোর্ট থাকতো, তাহলে এতটা হয়রানি হতে হতো না।’
গংগাচড়া জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, গেল এক বছরে শুধু এই একটি জোন থেকেই বকেয়া বিলের মামলার সংখ্যা ১৪৩টি। বিভাগীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ কোর্ট না থাকায় প্রতিটি মামলার জন্য বাদী ও বিবাদী- দুই পক্ষকেই ঢাকায় গিয়ে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হচ্ছে।
নাগরিক সমাজ মনে করছে, এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি বিভাগে বিদ্যুৎ কোর্ট স্থাপন সময়ের দাবি।
রংপুর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংক্রান্ত মামলা দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে নিষ্পত্তি করতে বিভাগীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ কোর্ট চালু করা জরুরি। এতে গ্রাহক হয়রানি কমবে, সেবার মানও বাড়বে।’
এ বিষয়ে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২’- এর জেনারেল ম্যানেজার মো. খুরশীদ আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিভাগীয় কোর্ট স্থাপন করা গেলে উভয় পক্ষেরই সময় ও খরচ বাঁচবে।’
বর্তমানে রংপুর বিভাগে অবৈধ সংযোগ ও বকেয়া বিল সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত আইনি জটিলতা থেকে গ্রাহকদের রক্ষা করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এখনই বিভাগীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ কোর্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি- এমনটাই দাবি ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টদের।
কেকে/ এমএ