অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘আপনারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির বিচার চান। আপনাদের সাথে একমত হয়ে আমি বলতে চাই, আমরা ব্যক্তি নয় বরং অপরাধীর বিচার করতে চাই। অপরাধের সাথে যারা সম্পৃক্ত হবে তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা-২০২৫’-এর রাজশাহী পর্যায়ের চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অনুষ্ঠানে মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘সংবিধান নাগরিকদের ইচ্ছার প্রতিফলন। নাগরিক হিসেবে আমি চাই, নিঃশঙ্ক চিত্তে বাংলাদেশে বসবাস করতে। আমি চাই ন্যায়বিচার, জীবনের অধিকার, কথা বলার অধিকার, লিখতে পারার অধিকারসহ বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। পক্ষপাতিত্ব নয়, সঠিক সময়ে সঠিক সেবা পেতে চাই; যেখানে কোনো স্বেচ্ছাচারিতা থাকবে না। সে জন্য সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রশ্ন আসে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর আমাদের একটি লক্ষ্য ছিল, আমরা স্বৈরাচার হটিয়ে বাংলাদেশকে জনগণের বাংলাদেশে রূপান্তর করব। আজ নানাজনের নানা মত লক্ষ্য করছি। সংস্কারের নামে বিভিন্ন প্রস্তাবনা পাওয়া যাচ্ছে। শুধু নিজের প্রস্তাবই সঠিক ভেবে অন্যের প্রস্তাবকে আমরা যেন উপেক্ষা না করি, সেটাও ভাবতে হবে। তা না হলে জুলাই চেতনা, সাংবিধানিক ভাবনা ভুলুণ্ঠিত হবে।’
তারুণ্যের স্বপ্ন দিয়ে সবকিছু জয় করা সম্ভব উল্লেখ করে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা বলেছেন, রাইট টু ইনফরমেশন সংবিধানের অংশ হওয়া উচিত। আমি একমত, তবে কীভাবে হবে তা নীতিনির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নিয়ে প্রত্যাশা ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে জুলাই শহীদদের রক্তের সাথে কেউ বেইমানি করতে পারবে না। সাংবিধানিকভাবে আমরা এমন একটা যৌক্তিক জায়গায় পৌঁছাতে চাই, যেখানে প্রতিটি শহিদের রক্তের মর্যাদা রক্ষিত হবে।’
এ সময় রাজনৈতিক সমঝোতার পথ-পরিক্রমায় একটি আধুনিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মো. আসাদুজ্জামান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য মুহাম্মদ একরামুল হক, উপ-উপাচার্য মো. ফরিদ উদ্দিন খান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিাত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ।
প্রতিযোগিতায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও আকাঙ্ক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ সময়োপযোগী, দূরদর্শী ও কার্যকর নীতি প্রস্তাবে তিন সদস্যবিশিষ্ট ৫টি দল অংশগ্রহণ করে। আজকের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জনকারী দলের নাম ছিল ‘টর্চলাইট’। প্রথম রানার আপ হয়েছে ‘দীপশিখা’ ও দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে ‘চেঞ্জমেকার’ দল।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের হাতে পদক, ক্রেস্ট ও পুরস্কারের চেক তুলে দেন।
কেকে/ এমএ