গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সদ্য উদ্বোধন হওয়া মওলানা ভাসানী সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরির মামলায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাদের একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে চুরির দায় স্বীকার করেছেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে সুন্দরগঞ্জের কঞ্চিবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ তাদেরকে গাইবান্ধা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে। শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন, ধাপেরহাট ইউনিয়নের ছাইগারি ইসলামপুর গ্রামের বাদশা শেখের ছেলে খায়রুল ইসলাম (২১) এবং রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত খিজির উদ্দিনের ছেলে মনছুর আলী (৬৯)। এর মধ্যে খায়রুল আদালতে ক্যাবল চুরির দায় স্বীকার করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কৃষিকাজের আড়ালে তারা দীর্ঘদিন ধরে চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত এবং একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সক্রিয় সদস্য।
কঞ্চিবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) মো. সেলিম রেজা বলেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধাপেরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর আদালতে খায়রুল ইসলাম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। চুরির সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'ক্যাবল চুরির মামলায় গ্রেফতার দুইজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। চুরির সঙ্গে আরও কারা জড়িত, তাদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।'
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বহুল প্রতীক্ষিত ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দুই দিন পর ২২ আগস্ট রাতে সেতুর সিকিউরিটি ইনচার্জ নুরে আলম বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার টাকার বৈদ্যুতিক তার চুরির কথা উল্লেখ করা হয়।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, দক্ষিণ পাশের সংযোগ সড়কের দুই পাশে থাকা ৮টি লাইটপোস্টের প্রায় ৩১০ মিটার ক্যাবল দুর্বৃত্তরা মাটি খুঁড়ে কেটে নিয়ে যায়। এর ফলে ১৩ জুন পরীক্ষামূলকভাবে লাইট জ্বালানো হলেও পরে আর জ্বলেনি; এমনকি উদ্বোধনের রাতেও আলো জ্বলতে ব্যর্থ হয়। পরদিন সকালে চায়না সাসেক প্রকল্পের কর্মীরা ঘটনাটি শনাক্ত করেন। তারা দাবি করেন, উদ্বোধনের আগেই এই চুরির ঘটনা ঘটেছিল।
কেকে/এআর