ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কীটনাশক বিষ পানে মরিয়ম আক্তার (১৫ মাস) ও দাদার মালিশের করফুল ওষুধ পানে মুজাহিদ(৩) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত দুই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শিশু মরিয়ম আক্তার গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। একই দিন সকাল ১০ টার দিকে শিশু মুজাহিদও হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে শিশু মরিয়মের জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার আগে গত বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব শিশু মুজাহিদের জানাজার নামাজ শেষে তাকেও পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শিশু কন্যা মরিয়মের বাড়ি উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের চর-আলগী গ্রামে। সে ওই গ্রামের নাজিম উদ্দিনের মেয়ে। বৃদ্ধ দাদার মালিশের করফুল ওষুধ পানে নিহত শিশু মুজাহিদের বাড়ি উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের মারোয়াকালী গ্রামে। সে ওই গ্রামের সঞ্জু মিয়ার ছেলে।
কীটনাশক বিষ পানে নিহত শিশু মরিয়মের চাচা ফারুক মন্ডল বলেন, গত বৃহস্পতিবার আনুমানিক বিকাল ৫ টার দিকে ফসলের ক্ষেতে ব্যবহৃত কীটনাশক বোতলের অবশিষ্ট কিছু কীটনাশক বিষ ভুলবশত আমার ভাতিজি মরিয়ম সকলের অগোচরে পান করে ফেলে। এতে মরিয়ম অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মরিয়মের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করে। ওইদিন সন্ধ্যা ৭ টা ১০ মিনিটের দিকে ময়মনসিংহ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মরিয়মকে মৃত ঘোষণা করেন।
দাদার মালিশের ওষুধ পানে নিহত শিশু মুজাহিদের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খেলাধুলার এক পর্যায়ে টেবিলের ওপর রাখা দাদার পায়ে মালিশের করফুল ওষুধ খেয়ে ফেলে মুজাহিদ। ওষুধ খাওয়ার পর মুজাহিদ অনবরত কাশি দিতে থাকে। বুঝতে পেরে গত বুধবার আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে মুজাহিদকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে স্বজনরা। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মুজাহিদকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে রেফার করে। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুজাহিদ মৃত্যুবরণ করে। কীটনাশক ও মালিশের ওষুধ পানে একই দিনে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাব (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, একই দিনে কীটনাশক ও মালিশের ওষুধ পানে দুই শিশুর মৃত্যু ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে নিহত দুই শিশুর পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ও তাদের বিনা ময়নাতদন্তের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দুটি তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও থানায় দুটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে।
কেকে/এআর