বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: শুক্রবার থেকে টঙ্গীতে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা শুরু      বন্যা-ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় নিহত ৪৪      দুদকের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ      বৃহস্পতিবারের উল্লেখযোগ্য সাত সংবাদ      ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’      নির্বাচনে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী : ইসি সচিব      ৪৫তম বিসিএস নন-ক্যাডারের ফল প্রকাশ, সুপারিশ পেলেন ৫৪৫ জন      
দেশজুড়ে
দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে নূরে আলমের সংগ্রামী জীবন
মাহমুদ হাসান লিটন, লালমোহন (ভোলা)
প্রকাশ: শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫৫ পিএম
ছবি : প্রতিনিধি

ছবি : প্রতিনিধি

৪২ বছর বয়সী মো. নূরে আলম। বছর দশেক আগেও নিজে রাজমিস্ত্রি কাজ করতেন। সেখানের উপার্জনের টাকা দিয়ে মা-বাবা আর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে স্বাচ্ছন্দে সংসার চালাতেন তিনি। তবে এক দুর্ঘটনায় তার জীবন থমকে গেছে। এখন একটি হুইল চেয়ারই তার সঙ্গী। 

দুই হাতে ওই হুইল চেয়ারের চাকা ঘুরিয়ে নূরে আলম ছুটে বেড়ান এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম। তার এ সংগ্রাম কেবল বৃদ্ধ মা-বাবা আর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে বেঁচে থাকার। ভাগ্যের নির্মমতা মেনে নিয়ে এখন রোজ হুইল চেয়ারে করে ঘুরে ঘুরে মানুষের কাছে হাত পেতে অর্থ সহযোগিতা নেন নূরে আলম। তিনি ভোলার লালমোহন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহেষখালি এলাকার বাকলাই বাড়ির মো. ইমাম হোসেনের ছেলে।

অসহায় নূরে আলম বলেন, ১০ বছর আগে ঢাকায় রাজমিস্ত্রি কাজ করতাম। তখন একদিন একটি ট্রাক আমাকে চাপা দেয়। ওই দুর্ঘটনার পর দুই বছরের মতো বরিশাল-ঢাকার হাসপাতালে হাসপাতালে কাটিয়েছি। তবে পা দুইটি আর রক্ষা করতে পারিনি। হাঁটুর ওপর থেকে দুইটি পা-ই একে একে কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর থেকেই আমার চলাফেরার সঙ্গী হয়ে যায় হুইল চেয়ার, বন্ধ হয়ে যায় উপার্জনের সব পথ। তবে এসব বন্ধ হয়ে গেলেও তো আর জীবন থেমে থাকবে না। কারণ আমার সংসারে রয়েছে বৃদ্ধ মা-বাবা আর স্ত্রী এবং দুই সন্তান। সন্তানদের মধ্যে একজন ছেলে, একজন মেয়ে। মেয়ে বড়, সে এবার দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে। তবে পাস করতে পারেনি। এ ছাড়া ছেলের বয়স ১২ বছরের মতো, সে স্থানীয় একটি মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।

তিনি বলেন, আমার দুই ভাই রয়েছে। তারা বিয়ে করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় থাকেন, আমাদের কোনো খোঁজ নেন না। তাই সংসারের বৃদ্ধ মা-বাবা আর স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে এখন একটি লক্কড়-ঝক্কড় হুইল চেয়ায়েরর চাকা দুই হাতে ঘুরিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের থেকে হাত পেতে অর্থ সহযোগিতা নিচ্ছি। সহযোগিতা চাইতে গেলে মানুষজন বিভিন্ন সময় নানান ধরনের মন্তব্য করেন। মানুষের ওইসব কথায় মাঝেমধ্যে অনেক মন খারাপ হয়। কি আর করবো, অসহায় মানুষ তো তাই মানুষের বাজে কথা শুনে আবারো যাই সহযোগিতা চাইতে। কারণ এর বিকল্প আর কিছু করতেও পারছি না। 

তিনি আরো বলেন, যা সম্পদ ছিল তা চিকিৎসার পেছনেই ব্যয় করে ফেলেছি। এখন কেবল বসত ভিটাটুকুই আছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। ভাতার ওই টাকা আর মানুষের দেওয়া সহযোগিতা নিয়েই বৃদ্ধ মা-বাবা আর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছি। সরকারি-বেসরকারি বা সমাজের বিত্তবানদের উদ্যোগে যদি আমাকে একটি মুদি দোকান করে দেওয়া হয় তাহলে আমাকে বেঁচে থাকার জন্য আর এত কষ্ট করতে হবে না। তাই আমাকে এই কষ্ট আর অসহায়ত্ব থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে সরকারি-বেসরকারি বা সমাজের বিত্তবানদের আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। 

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ জানান, ওই ব্যক্তি সরকারিভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তারপরও তিনি আমাদের কাছে লিখিত আবেদন করলে তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জীবন্ত প্রতীক
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বেনাপোলে প্রথম হাসপাতাল নির্মাণ করবে : তৃপ্তি
গঙ্গাচড়ায় ধান মাড়াই মেশিনের আগুনে ক্ষয়ক্ষতি
সুন্দরগঞ্জে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে স্প্রে মেশিন বিতরণ
ঐক্যের পরিবর্তে সমাজে অনৈক্য ও বিভাজন ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে

সর্বাধিক পঠিত

বাঞ্ছারামপুরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল
চাঁদপুর-২ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা রয়েছে: তানভীর হুদা
নাগেশ্বরীতে ১০ টাকার স্বাস্থ্য সেবা চালু
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ১২.৫ ডিগ্রি
দুই ট্রলারসহ সেন্টমার্টিনে ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close