সিরাজগঞ্জের এক পিতা ও তার পুত্রের নেতৃত্বে দেশে গড়ে উঠেছে এক ব্যতিক্রমী সংঘবদ্ধ ডাকাতচক্র। প্রায় ৫০ জনের এই চক্রটি সারাদেশের কলকারখানা থেকে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং মূল্যবান তামার তার ডাকাতি করে। এই ডাকাত চক্রের বেশিরভাগ সদস্যের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তারা ঢাকায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এই চক্রের দুজন সদস্য সারা দেশে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে। পরে দলের প্রধান বাবা-ছেলে ডাকাতির স্থান নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য চক্রের সদস্যদের দায়িত্ব দেয়।
রাজশাহীর মোহনপুরের দেশ কোল্ড স্টোরেজে গত ৭ আগস্ট রাতে সংঘবদ্ধ একটি ডাকাতির ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে দুইজনকে গ্রেফতারের পর ব্যতিক্রমী এই সংঘবদ্ধ ডাকাতচক্রের সন্ধান পেয়েছে রাজশাহী সিআইডি।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার এ এ এম হুমায়ুন কবীর এসব তথ্য জানান।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকার আশুলিয়া ও গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে ডাকাতচক্রের দুই সদস্য সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পিপুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত মফজেল শেখের পুত্র সাজেদুল শেখ ও একই জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বিনোটিয়া গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের পুত্র মো. রুবেলকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহী সিআইডি।
এর আগে এই চক্রের কয়েকজন সদস্য নাটোর চিনিকলে ডাকাতির সাথে জড়িত ছিল জানিয়ে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এএএম হুমায়ুন কবীর জানান, প্রতিটি ডাকাতির ঘটনায় ১০ থেকে ১৫ জন অংশ নেন। এর বিনিময়ে প্র্যতেকে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পান। শ্রমিক হিসেবে পরিশ্রম করে যেখানে দিনে গড়ে এক হাজার টাকা উপার্জন করা যায়, সেখানে একদিন ডাকাতি করে সফল হলে যে ভাগ পাওয়া যায়, তা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন শুয়ে-বসে খেতে অসুবিধা হয় না বলে চক্রের সদস্যরা সিআইডিকে জানিয়েছে।
সিআইডি সূত্র জানায়, সংঘবদ্ধ এই ডাকাতচক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার সাদেক ও তার পুত্র হাসান। তারা ঢাকায় থেকে এই ডাকাত দল পরিচালনা করে। এই দলটি রংপুর চিনিকলেও ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ডাকাতির কাজে তারা দুটি নম্বরবিহীন পিকআপ ভ্যান ব্যবহার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে পিকআপ ভ্যান রাখে। ডাকাতি করে সফল হলে তারা মালামাল পরিবহনের জন্য পিকআপ দুটি ব্যবহার করে। ডাকাতদলের অন্যান্য সদস্যদেরও পর্যায়ক্রমে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে রাজশাহী সিআইডি।
কেকে/এজে