ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচনে কোন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায়।
শনিবার (৯ আগস্ট) রংপুর বিভাগীয় কমিশনার সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মিটিং শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
এর আগে সকালে রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সম্মেলনকক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসংক্রান্ত মতবিনিময় সভা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সভায় উপস্থিত ছিলেন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা।
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন সিস্টেমের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসাটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশন আগামী সংসদ নির্বাচনে কারো পক্ষে ও বিপক্ষে কাজ করবে না। ১৮ কোটি মানুষের হয়ে কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে ঘাটতি থাকায় ভোটের প্রতি মানুষের বিশ্বাস কমে গেছে। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, পোলিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।’
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জনগণের আস্থা ফেরানোর পাশাপাশি এআই ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অভ্যাস ভুলে গেছে। ভোটের দিন শুয়ে থাকে। আরামে ঘুমায়। তারা মনে করে, আমি না গেলে ভোটটা তো কেউ না কেউ দিয়ে দেবে। এ ধরনের একটা মানসিকতা ছিল। এই যে মানুষকে ভোটকেন্দ্রমুখী করা, সবাইকে কেন্দ্রে নিয়ে আসা—এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয় গেছে।’
তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাংবাদিকেরা আমাদের পক্ষের শক্তি, যারা নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে অবদান রাখতে পারেন।’
এ সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারকে অস্ত্রের চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘অস্ত্রের চেয়েও মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এআইয়ের অপব্যবহার। সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার। এইটা একটা বড় চ্যালেঞ্জে হয়ে গেছে আমাদের জন্য।’
এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, ‘সাংবাদিকদের আমরা পক্ষের শক্তি মনে করি। যারা প্রফেশনাল সাংবাদিক, সেটা প্রিন্ট মিডিয়া হোক, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া হোক, তারা আমাদেরই পক্ষের লোক। ইলেকশনটাকে ট্রান্সপারেন্ট করার জন্য ভূমিকা রাখবেন। যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। যাচাই করাটা খুবই দরকার। যাচাই করে সঠিক হলে তা শেয়ার করুন কোনো সমস্যা নেই।’
বিগত নির্বাচনগুলোতে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, শিক্ষকদের অনিয়ম নিয়ে সিইসি বলেন, ‘যারা আগে জড়িত ছিল, তাদের যথাসম্ভব ব্যবহার না করার চিন্তা করছি। এখন ভাই, আমি তো মানুষকে ইনপুট করতে পারব না! মানুষ তো বিদেশ থেকে আমদানি করে নির্বাচন করতে পারব না। এ দেশের মানুষ দিয়েই করতে হবে। আমার ওই লোকগুলোকে এদিক-ওদিক করে করতে হবে।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘দেশের মানুষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব।’
কেকে/এজে