বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: নির্বাচনি কার্যক্রম শুরুর আগেই পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছি      শুক্রবার থেকে টঙ্গীতে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা শুরু      বন্যা-ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় নিহত ৪৪      দুদকের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ      বৃহস্পতিবারের উল্লেখযোগ্য সাত সংবাদ      ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’      নির্বাচনে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী : ইসি সচিব      
দেশজুড়ে
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজে
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫, ৬:৩৩ পিএম
টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ। ছবি : প্রতিনিধি

টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ। ছবি : প্রতিনিধি

গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজে শিক্ষক নিয়োগে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীসহ অভিভাবক ও অভিভাবিকাবৃন্দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঐতিহ্যবাহী টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজে দীর্ঘদিন যাবত সুনামের সহিত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আলাউদ্দিন মিয়া। তিনি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ধরে রাখতে গিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। অনেক গরিব, অসহায় ছাত্রছাত্রীদের অল্প বেতনে লেখাপড়া করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এমনকি যে-সকল ছাত্র-ছাত্রীরা বেতন ও পরীক্ষার ফি দিতে পারেনি তাদেরকেও তিনি সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকা অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে তিনি সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দায়েরকৃত হত্যা মামলায় বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

অপরদিকে কলেজ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান হারুন অর রশিদ। তিনি দায়িত্ব পাওয়ায় অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগের নামে বিপুল অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ১৯৯২ সালে প্রভাষক হিসাবে নিয়োগ পান হারুন অর রশিদ। ওই সময় কলেজ শাখা এমপিওভুক্ত না থাকার কারণে ১৯৯৪ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে স্কুল শাখায় এমপিওভুক্ত নেন তিনি। আবার ২০০০ সালে যখন কলেজ এমপিওভুক্ত হয়, তখন ১৯৯২ সালের নিয়োগ দেখিয়ে পুনরায় কলেজ শাখায় প্রভাষক হিসেবে এমপিওভুক্তি নেন। যার কারণে ২০০০ সালে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অ্যাকাউন্টে ট্রেজারি চালান এর মাধ্যমে অবৈধভাবে স্কুল শাখা হতে উত্তোলিত টাকা ফেরত প্রদান করতে বাধ্য হন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষকরা জানান, চলতি এইচএসসি মডেল টেস্ট পরীক্ষায় উত্তোলনকৃত প্রায় ৬ লক্ষ এবং এসএসসি পরীক্ষার ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনর রশিদ, শিক্ষক প্রতিনিধি আনিছ ও রাজু মাস্টার ভাগভাটোয়ারা করে নিয়ে গেছে। দায়িত্ব নিয়ে তারা যেভাবে লুটপাট, অনিয়ম শুরু করেছেন এতে অভিভাবক-অভিভাবিকা ও সাধারণ শিক্ষকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

সূত্রে আরো জানা যায়, ইংরেজি শিক্ষক মোনায়েমের কাছ থেকে ৩ লক্ষ, লিটনের কাছ থেকে ৩ লক্ষ, হিসাব  বিজ্ঞানের জাকিরের কাছ থেকে ২লক্ষ ৫০ হাজার, অর্থনীতির শিক্ষক  রহিম এর কাছ থেকে ৩ লক্ষ, ব্যবস্থাপনা শিক্ষক জামরুল এর কাছ থেকে ২লক্ষ, গণিত শিক্ষক আতিয়ার  এর কাছ থেকে ২লক্ষ ৫০ হাজার, বিজ্ঞান এর শিক্ষক সোহেলী মুমুর কাছ থেকে ২লক্ষ ৫০হাজার টাকা নেন। এছাড়াও হিসাব বিজ্ঞানে ১ম স্থান অধিকার করা অমিত হাসানের কাছে স্কুলে চাকুরির জন্য ৪ লক্ষ টাকা দাবি করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনর রশিদ ও রাজু মাস্টার। ৪লক্ষ টাকা না দেওয়ায় অমিত হাসানের চাকুরি হয়নি। 

একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়া বাংলার প্রভাষক এমদাদুল হকের নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে গত ১৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের  চাপে পদত্যাগের ভয়ে পলাতক ছিলেন। পরে কলেজ অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া বৈষম্য বিরোধী মামলায় ২২ এপ্রিল গ্রেফতার হন। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুন ও শিক্ষক প্রতিনিধি আনিসকে ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করে ২৭ এপ্রিল ২০২৫ থেকে পুনরায় কলেজে নিয়মিত আসছেন। উল্লেখ্য যে, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও অশোভন কথোপকথন এর ৭৫ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ড ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যাহা প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। 

অপরদিকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি সরকার বাবুর বোন স্কুল শাখার শিক্ষক জাহানারা বৈষ্যম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর ভয়ে পালিয়ে দীর্ঘ ৭ মাস কলেজে আসেননি তার কাছ থেকেও সবকিছু ঠিকঠাক করে দেওয়ার কথা বলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনর রশিদ ৬ লক্ষ টাকা দাবি করেন। টাকা দেওয়ার পর তিনিও ২৪ এপ্রিল হতে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন।

এইচ এসসি পরীক্ষার্থী নার্গিস আক্তারের বাবা রশিদ জানান, বাবা মায়ের পরেই শিক্ষকদের অবস্থান, আর সেই শিক্ষকই যদি ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেয় ও সেক্সুয়াল হ্যারেজমেন্ট করেন তাহলে আমরা কোথায় যাবো। এরকম একজন চরিত্রহীন লোক শিক্ষক নামে কলংক এমদাদকে পুনরায় কলেজে আসার সুযোগ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অন্যায় করেছেন তার বিচার আল্লাহই করবেন।

এব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার ও সভাপতির নাম ব্যবহার করে কিছু টাকা লেনদেন হয়েছে আমিও শুনেছি তবে এতো টাকা না। আমি এই লেনদেনের সাথে জড়িত না। যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাংলার শিক্ষক এমদাদকে মানবিক কারনে জয়েন্ট করিয়েছি কোন অর্থের জন্য নয়।

এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি ড. দিলরুবা খানমের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার কাছে এমন কোন অভিযোগ আসেনি আসলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো। এছাড়াও বেশকিছু বিষয়ের উপর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেকে/ এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনি কার্যক্রম শুরুর আগেই পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছি
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জীবন্ত প্রতীক
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বেনাপোলে প্রথম হাসপাতাল নির্মাণ করবে : তৃপ্তি
গঙ্গাচড়ায় ধান মাড়াই মেশিনের আগুনে ক্ষয়ক্ষতি
সুন্দরগঞ্জে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে স্প্রে মেশিন বিতরণ

সর্বাধিক পঠিত

বাঞ্ছারামপুরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল
চাঁদপুর-২ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা রয়েছে: তানভীর হুদা
নাগেশ্বরীতে ১০ টাকার স্বাস্থ্য সেবা চালু
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ১২.৫ ডিগ্রি
সোনাইমুড়ীতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close