হলহলিয়া নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। একমাত্র উপায় হিসেবে প্রতিনিয়ত পারাপার হতে হয় পথচারীসহ শিক্ষার্থীদের। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ১৯ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ। একটি সেতু নির্মাণ করা হলে পালটে যেতে পারে ওই চরাঞ্চলের কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক অবস্থা। এমন চিত্র কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের কাজাইকাটা এলাকায়। তবে হলহলিয়া নদীর ওপর দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মানুষের উপজেলা শহরে যাওয়া-আসার একমাত্র রাস্তা হলহলিয়া নদীতে নৌকা কিংবা বাঁশের সাঁকো। এই নদীর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন কাজাইকাটা, চর কাজাইকাটা, আন্দবাজার, ফুলকার চর, শান্তির চর, খরানিয়ারচর, সোনাপুর, গেন্দার আলগা, নামাজের চর, খেয়ারচর, ডিগ্রীরচর, বাংলা বাজার, চর ইটালুকান্দা, লাউবাড়ি, উত্তর নামাজের চর, জাহাজের আলগা, দই খাওয়ার চর, হবিগঞ্জ ও ফুলকার চর গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে জানান, বিভিন্ন সময় নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতারা একাধিকবার ওই হলহলিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয় না। এ কারণে ১৯ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এ ছাড়া জমির উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারেন না। করতে পারে না গাড়ি চলাচল। এ কারণে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পড়েছেন বিপাকে।
স্থানীয় শাহিন মিয়া বলেন, প্রতিদিন কোনো না কোনো কাজে তাদের দাঁতভাঙ্গা বাজারসহ রৌমারী শহরে যাওয়ার জন্য নদী পার হতে হয়। এতে অনেক কষ্ট হয়। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্বিগুণ খরচ বহন করতে হয়।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বাদল মিয়া বলেন, নদীতে সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে তাদের। শুধুমাত্র একটি সেতুর অভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনারও শিকার হচ্ছেন।
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলাল জানান, ওই স্থানে সেতু নির্মাণ করার জন্য অনেকবার বলা হয়েছে উপজেলা মাসিক সভায়। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় আমার এই অঞ্চলের মানুষের চলাফেরা করতে নানা ধরনের কষ্ট ভোগ করতে হয়।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মনছুরুল হক বলেন, আমার ও ইউএনও স্যারের কাছে যদি দাবি করে তাহলে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, বিষয়টি জেনেছেন তিনি। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি, অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এএম