ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪ | ২২ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অপরিচিত নম্বর থেকে ভিডিও কল, রিসিভ করলেই সর্বনাশ

তৌফিকুল ইসলাম আশিক, মেরিটাইম
🕐 ৫:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

অপরিচিত নম্বর থেকে ভিডিও কল, রিসিভ করলেই সর্বনাশ
আপনি হয়ত উচ্চশিক্ষার জন্য নিয়মিত বাইরের দেশে আবেদন করছেন কিংবা চাকরিসূত্রে বিদেশী ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। হঠাৎ বিদেশী নম্বর থেকে ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ এ কল আসায় জরুরি ভেবে কল ধরে ফেললেন। স্বাভাবিকভাবেই ইংরেজিতে কিছুক্ষণ কথা বলার চেষ্টা করছেন। ২০-৩০ সেকেন্ড পরিচয় দিয়ে কথা বলার পরই কলটা কেটে গেলো, কিংবা আপনিই কেটে দিলেন। কিন্তু আপনি যে ফাঁদে পড়ে গেছেন সেটা থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই।

সম্প্রতি বাংলাদেশে এভাবেই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে পরবর্তীতে সেই কলের স্ক্রিনরেকর্ড এডিট করে বিকৃত ভিডিও বানিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভারতীয় একটি চক্র। সাথে মানসিক চাপ ও সামাজিক অবস্থান নষ্ট হওয়ার ভয় তো আছেই।

চক্রটি কয়েকটি ধাপে কাজগুলো করে থাকে। প্রথমত আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে লক্ষ্য করবে কয়েকদিন। কোনোভাবে আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত হবে। কথা বলার এক পর্যায়ে আপনাকে কল দিবে কিংবা ওহাটসঅ্যাপ নম্বর নিয়ে সেখানে কল দিবে। পরবর্তিতে ভিডিও কল থেকে এডিট করা ভিডিও দিয়ে শুরু করবে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করা। হয়ত সাথে সাথে আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দিবেন। কিন্তু কয়েকদিন আগেই তারা আপনার প্রোফাইল থেকে ফ্যামিলির ডিটেইলস, সক্রিয় বন্ধু বান্ধবের আইডির একটি লিস্ট করে রেখেছে। টাকা না দিলে পরিচিতদের ওই এডিটেড ভিডিও দেয়া শুরু করবে।

আপনি হয়ত ভাবছেন টাকা দিলেই বোধহয় আর সমস্যা করবে না। কিন্তু বিষয়টা আরো জটিল। যত টাকা দিতে থাকবেন তারা তত টাকা চাইবে। ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত চাইবে, যতক্ষন না আপনি তাদেরকে উপেক্ষা করবেন। এভাবেই হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভারতীয় চক্রটি। টাকা নেয়ার জন্য ব্যবহার করছে বিকাশ কিংবা নগদ নম্বর। সামাজিক সম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই টাকা দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় না। তাদের টার্গেট থাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে যাদের সক্রিয় অবস্থান রয়েছে কিংবা যাদের দেখে সামর্থবান মনে হয় তারা।

একাধিক ভুক্তভুগী সাথে কথা বলে জানা গেছে, সামাজিক সম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই টাকা দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আইন শৃংখলা বাহিনীকে এ বিষয়ে কোনো কিছুতে অবহিত করেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভুগী প্রায় ৩১ হাজার টাকা দিয়েছেন এই চক্রটিকে। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হচ্ছে এই চক্রটি একটি কমিউনিটিকে একসাথে এটাক করে। কাউকে এটাক করা হলে, কয়েকদিনের মধ্যে তারই পরিচিত অন্য কাউকে এটাক করবে এমনটাই সন্দেহ করছেন ভুক্তভুগীরা। এছাড়াও কিছুক্ষণের হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে মোবাইলে থাকা বিভিন্ন একাউন্ট এর একসেস নিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।

এই ধরনের সমস্যায় পড়লে ওই চক্রের সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়াও এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপরিচিত কারো সাথে যোগাযোগ না রাখা এবং কল না ধরারও পরামর্শ দিয়েছেন।
 
Electronic Paper