ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৬ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

‘লাশের ওপর দাঁড়িয়ে প্রজ্ঞাপন নির্মমতার আরেকটি ইতিহাস’

জ্যৈষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ২:০৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২৪

‘লাশের ওপর দাঁড়িয়ে প্রজ্ঞাপন নির্মমতার আরেকটি ইতিহাস’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেছেন, গুম-গ্রেফতার করে, প্রপাগান্ডা চালিয়ে, ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন ও কারফিউ দিয়ে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল শক্তিকে ব্যবহার করে সরকার কোটা সংস্কারের আন্দোলনে নামা ছাত্র-নাগরিকদের ছত্রভঙ্গ করে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। রক্ত ও লাশের ওপর দাঁড়িয়ে এ প্রজ্ঞাপন শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের প্রতি নির্মমতার আরেকটি ইতিহাস হয়ে থাকলো।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ৫ সমন্বয়ক এসব কথা বলেছেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। অপর সমন্বয়কদের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মাহিন সরকার ও সহ-সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম।

এসময় তারা দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির দায় সম্পূর্ণ সরকারের বলে মন্তব্য করেন। তারা বলেন, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনজীবনের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এখন সমগ্র পরিস্থিতির দায় শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ওপর চাপিয়ে সরকার পুনরায় দায় এড়াচ্ছে।

সমন্বয়করা বলেন, আলোচনায় বসার পরিবেশ তৈরির জন্য সরকারের কাছে চার শর্ত দেন। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইন্টারনেট সচল করা, কারফিউ তুলে নেওয়া, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরিয়ে নিয়ে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া এবং শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলেন তারা। সেইসঙ্গে সারা দেশে নির্বিচারে মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে জানিয়ে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আহ্বান করেন, ‘ছাত্র-জনতার মুখোমুখি আর দাঁড়াবেন না।’

সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের একটি অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বিতর্কিত এবং উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে। এবং পরবর্তীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্যায়ভাবে দমন-পীড়ন এবং হামলা-মামলা করে আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হয়। তখন আমরা অভিভাবক শিক্ষকসহ প্রাইভেট পাবলিক, ন্যাশনালসহ সকল ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং সর্বস্তরের নাগরিকদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাই আমাদের নিরাপত্তার জন্য। ছাত্র-নাগরিকরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং পরবর্তীকালে দেখতে পাই সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে এক ধরনের ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। এবং শিক্ষার্থীদের হলগুলো থেকে বিতাড়িত করা হয় যা সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। পরর্তীতে সেনাবাহিনী নামিয়ে কারফিউ জারি করা হয়। এবং এই অরাজক পরিস্থিতির সুযোগে পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য দুর্বত্তরা বিভিন্ন ধরনের নাশকতা করে। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগায় ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে। প্রতিবাদী ছাত্র-নাগরিকের সাথে এই সকল সহিংস ঘটনার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। এটা স্পষ্ট সরকারের দায়িত্বহীন আচরণ ও দমনপীড়ন নীতির জন্য এই অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর দায় সর্ম্পূণ সরকারের। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনী জনজীবনের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এখন সমগ্র পরিস্থিতির দায় শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ওপর চাপিয়ে সরকার পুনরায় দায় এড়াচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই সরকারের সাথে আলোচনার কথা বলেছি। কিন্তু সরকার ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন করে ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের বিতাড়ন করে রাস্তায় নিরীহ জনগণের ওপর গুলি চালানো অবস্থায় আমাদের সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলো। আমরা সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছি। ফল স্বরূপ আমাদের আন্দোলনের এক নম্বর সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম অর্থাৎ আমাকে গুম করে ২৪ ঘণ্টা শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করা হয়। অন্য কিছু সমন্বয়ক সরকারের প্রতিনিধির কাছে তাদের বক্তব্য ও কিছু দাবি পেশ করতে গেলে সেটাকে সংলাপ বলে মিডিয়ায় প্রপাগান্ডা চালানো হয়। গুম-গ্রেফতার, প্রপাগান্ডা, ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন, কারফিউ, রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল শক্তিকে ব্যবহার করে সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও প্রতিবাদী ছাত্র-নাগরিকদের ছত্রভঙ্গ করে এখন কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। রক্ত ও লাশের ওপর দাঁড়িয়ে এ প্রজ্ঞাপন শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের প্রতি নির্মমতার আরেকটি ইতিহাস হয়ে থাকলো। কোটা সংস্কার ছিলো একটি অরাজনৈতিক ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের আন্দোলন। সরকার এটিকে প্রথম থেকেই রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে চেয়েছিলো। সরকারবিরোধী মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও রাজাকারের সন্তানসহ নানা ট্যাগ দিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করা হয়েছিলো।’

‘এতো কিছুর পরেও আমরা মনে করি মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেছেন। সে অনুযায়ী সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। কিন্তু আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোটা সংস্কার আন্দোলনের স্টেক হোল্ডার হচ্ছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এবং পাশাপাশি অন্যান্য কোটা যারা পান তারাও। সেই স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনা ও সংলাপ ব্যতিত এই ধরনের প্রজ্ঞাপন সমিচীন নয়। আমরা চেয়েছিলাম, একটি সংলাপের মাধ্যমে সকল পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে একটি প্রজ্ঞাপন হবে, যাতে নতুন করে আবার কোনো সমস্যা তৈরি না হয়। সম্ভাব্য যথাযথ পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিৎ করে কোটা সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান আমরা চাই।’

‘গত কয়েক সপ্তাহে রক্তারক্তির পরিস্থিতিতে সারাদেশে কয়েকশত ছাত্র নাগরিক শহীদ হয়েছেন এবং কয়েক হাজহার লোক আহত হয়েছেন জানিয়ে নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। অনেক বাবা এখনো সন্তানের লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা কোটা সংস্কার চাই না। আমরা সকল হতাহতের ঘটনার বিচার চাই। আমাদের আহ্বানে সকল শিক্ষার্থী এবং নাগরিকরা রাজপথে নেমেছিলো। আমরা জনগণকে বলতে চাই, আমরা জনগণের সাথে আছি। আমাদের চূড়ান্ত দাবি ক্যাম্পাসগুলো খুলে সকলের সাথে আলোচনা করে আমরা জাতির সামনে পেশ করতে চাই।’

নাহিদ বলেন, ‘আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমাদের বাসায় পুলিশ, ডিবি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন যাচ্ছেন, সারাদেশে নির্বিচারে মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমরা এই পরিস্থিতির অবসান চাই। নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে- ছাত্র-জনতার মুখোমুখি আর দাঁড়াবেন না। আর একটি গুলিও যাতে কাউকে হত্যার উদ্দেশে না ছোঁড়া হয়। এবং আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সারাদেশে যে সকল মানুষ শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে, আমরা তাদের পাশে আছি, শেষ পর্যন্ত থাকবো। কিন্তু এখন যেহেতু ইন্টারনেট নেই এবং আমাদের সমন্বয়কদের মধ্যে অনেককে এখনো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এ অবস্থা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা সকল সমন্বয়ক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে জনমতের ভিত্তিতে আমাদের আরো কিছু দাবি-দাওয়া তুলে ধরবো।’

সমন্বয়কদের উত্থাপিত নানা দাবিদাওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং সেটা যোগাযোগহীনতার কারণে হয়েছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিৎ করলে আমরা সুস্পষ্টভাবে সেই দাবিগুলো সকলের সামনে পেশ করতে পারবো। তার আগে আমাদের প্রধান যে বক্তব্য তা হচ্ছে- আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে এবং গুম ও গ্রেফতারে মধ্য দিয়ে যে হয়রানি হচ্ছে সেটা বন্ধ করতে হবে। আমাদের ক্যাম্পাস খুলে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিৎ করতে হবে।

বক্তব্যে অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ আন্দোলনের শুরু থেকে আমরা সরকারকে কাছে আহ্বান করছিলাম- আমাদের সাথে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যাটি সমাধান করার জন্য। আজকে যে তাণ্ডব হয়েছে, জ্বালাওপোড়াও হয়েছে, অগ্নিসংযোগ হয়েছে সরকারের জানমালের যে ক্ষতি হয়েছে এটির দায়ভার সরকার এড়াতে পারে না। কারণ আমরা সবসময় চেয়েছি একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান। কিন্তু শান্তিপূর্ণ সমাধান করে আজকের এই পরিস্থিতিতে আমাদেরকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। এজন্য আমরা সরকারকে আহ্বান জানাবো যতো দ্রুত সম্ভব ইন্টারনেট বন্ধ করে যে ডিজিটাল ক্র্যাকডাইন চালানো হয়েছে, ইন্টারনেট সংযোগ পুনর্বহাল করে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনুন। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে আমাদের সমন্বয়কদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে, তথ্যের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে- আমাদের দাবি পেশের ঘটনাকে সংলাপ হিসেবে উপনস্থাপন করা হয়েছে।’

হাসনাত বলেন, ‘আমরা এতগুলো লাশের ওপর দিয়ে কখনোই সরকারের সাথে সংলাপ চাইনি। এভাবে আমরা সংলাপ করবো না। সরকারে প্রতি আহ্বান থাকবে, খুব শিগগিরই যে পুলিশ সদস্যরা ছাত্রদের হত্যা করেছে তাদেরকে এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডাররা যেভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃসংশভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় হামলা ও হত্যা করেছে তাদেরকে দ্রুততম সময়ে বিচারের আওয়তায় এনে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে হবে।’

আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি থেকে এ আন্দোলনের শুরু করেছিলাম। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনেই এ আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘটাবো।

সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘সরকারের যে মনোভাব আমরা এখন দেখছি, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে এরকম ন্যূনতম সদিচ্ছা যদি আজ থেকে ৫ দিন আগে দেখাতে তাহলে এত লাশ পড়তো না।’

তিনি বলেন, ‘যে দাবিটি ছিল পুরো বাংলাদেশের প্রাণের দাবি সেই দাবি মানার ক্ষেত্রে সরকার প্রলম্বিত করেছে। সেই দাবিকে ভাঙচুরে পরিণত করেছে সরকার। দাবিকে মেনে নিতে গিয়ে তিনশ, চারশ, কিম্বা নাম জানা-না জানা, অসংখ্য মানুষের লাশ ফেলে দিয়ে আজকে সরকার ঠিকই সেই দাবি পূরণ করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের যে ক্ষতি হয়ে গেছে, বাংলাদেশের অসংখ্য পরিবার, এগুলা কখনো পুরণ করা সম্ভব নয়।’

সারজিস বলেন, আজকে সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলের বিভিন্ন মন্ত্রী যেভাবে সংবেদনশীল বক্তব্য দিচ্ছেন, এমন একটি বক্তব্যের প্রত্যাশায় আমরা শাহবাগে দশদিন ছিলাম। কিন্তু তখন তারা আমাদের বিভিন্ন ট্যাগ দিয়েছে।

সারজিস আলম ইন্টারেনট সচল করা, কারফিউ তুলে নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরিয়ে নিয়ে সরকার এবং প্রশাসনের সমন্বয়ে সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিৎ করে আবাসিক হল খুলে দেওয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করা এবং শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করে আরো ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেন।

তিনি আরো বলেন, এই চারটি দাবি পূরণ না করলে বাকি ৮টি দাবি নিয়ে কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। এ পর্যন্ত আল্টিমেটামের কোনো রেসপন্স আমরা পাইনি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে প্রত্যেকবার সরকারকে সেই সুযোগটা দিয়েছি। কিন্তু যতক্ষণ না এটা চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সরকার কোনো রেসপন্সই করে না।

গতকাল (মঙ্গলবার) আইনমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের ক্লাসে ফিরে যেতে। তিনি আইনমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখে সারজিস বলেন, ‘আপনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে ভরে রেখেছেন, হল বন্ধ করে রেখেছেন, আমরা কোথায় যাব? আপনাদের কথার তো প্রাসঙ্গিকতা থাকতে হবে। সেই জায়গা থেকে আমরা যে চারটি জরুরি দাবি জানিয়েছি, আমরা আবারও দুই দিনের আল্টিমেটাম দিচ্ছি, আমরা চাই বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে সরকারের পক্ষ থেকে কথা বলে সেই পরিবেশটি তৈরি করা হোক। এবং শুক্রবারের মধ্যে যেন আমরা সব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে পারি। শিক্ষার্থীরা যদি ক্যাম্পাসে ফিরতে না পারি তাহলে ওই একাডেমিক পরিবেশ ফিরে আনার গল্পগুলো শুধু গালগল্প হিসেবেই থেকে যাবে।’

 
Electronic Paper