এক দফা আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে: নজরুল ইসলাম খান
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৯:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২৪
সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন জোরদারে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আজ রোববার (১৪ জুলাই) বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক ১২ দলীয় জোটের সাথে বৈঠকের পরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি একথা জানান।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বার বার আমরা দেখছি যে, সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে, সংকট বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এটা গ্রহনযোগ্য নয়। দেশে যে বিদ্যমান সংকট তৈরি হয়েছে, গণতন্ত্র হীনতার সংকট। দূর্নীতি-অনাচারে দেশ ছেয়ে গেছে এবং পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে যে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের নিযুক্ত ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা দুর্নীতি করে দেশটাকে ফোকলা করে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো শূণ্য হয়ে যাচ্ছে, টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। দ্রব্যমূ্ল্যের ঊধ্বগতিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, দেশের স্বার্থ হানিকর চুক্তি-সমঝোতা করা হচ্ছে। সীমান্তে মানুষ হত্যা হচ্ছে, অরক্ষিত থাকছে, নানা কারণে আমরা মনে করি যে, এক দফার দাবিতে আমরা লড়াই শুরু করেছি। ওই এক দফা বাস্তবায়ন ছাড়া সংকটের সমাধান হবে না। আর সেই এক দফার যে লড়াই সেই লড়াইকে এগিয়ে নিতে আমরা আগামী দিনে কর্মসূচি ঘোষণা করবো। ওই কর্মসূচি ঘোষণার প্রেক্ষিত হিসেবে আজকে আমাদের মধ্যে এই আলোচনা হয়েছে।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে বৈঠকে বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, ইসলামি ঐক্যজোটের একাংশের মাওলানা আবদুল করিম, লেবার পার্টির একাংশের ফারুক রহমান,কল্যাণ পার্টির একাংশের শামসুদ্দিন পারভেজ ও ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন।
গত তিন দিনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক বাম গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়বাদী সমমনা জোট, এনডিএ, গণফোরাম, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আপনারা জানেন যে, ছাত্রদের দাবি ছিলো কোটা সংস্কারের, কোটা বাতিল। সেই দাবির প্রতি বিএনপি সমর্থন জানিয়েছে। সেই ছাত্ররা এখন এই দাবিতেই আন্দোলন করছে। আপনারা দেখেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীরা শপথ গ্রহন করেন তখন তাদেরকে বলতে হয় যে, কখনো অনুরাগ বা বিরাগে মুখোমুখি হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। কিন্তু আমরা দেখলাম যে, প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিলেন যে,ছাত্রদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনের বিষয়ে বিরাগের বশবর্তী হয়ে তিনি কোটাই বাতিল করার ঘোষণা করেছিলেন। এটা কেউই যুক্তি সঙ্গত মনে করে না, মনে করে বিরাগের বশবর্তী হয়ে এটা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইভেন সরকারি দলের অনেক লোকও বলে আরকি ওইভাবে সিদ্ধান্ত সঠিক হয় নাই এবং ওইভাবে করার কারণেই হাইকোর্ট সেটা আংশিকভাবে বাতিল করেছিলো। যার বিরুদ্ধে আবার আন্দোলন শুরু হলো, এখন সবটাই বাতিল হয়ে গেছে। তার মানে আগে আগে যে কোটা ছিলো সেটা বহাল হয়ে গেলো। তো এভাবে এসব সমস্যার সমাধান হয় না। কয়েকটা বছর ধরে এই আন্দোলনকে জিইয়ে রেখে এটা অর্থহীন হয়েছে। উচিত ছিলো যেটা সেটা হলো যে, সংস্কারের ব্যবস্থা করা এবং যুক্তিসঙ্গত সংস্কার। আমার দলের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তার বাইরে আমাদের কোনো বক্তব্য নাই।