আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন সাবেক মন্ত্রী মাইন উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তরুণ নেতা রফিকুল আমিন ভূঁইয়া রুহেল।
তৃণমূল থেকে উঠে আসা রুহেল স্থানীয় রাজনীতিতে পরিবর্তনের মাধ্যমে মডেল রায়পুরা গড়তে চান। বিএনপির সকল কর্মকান্ডে সক্রিয় থাকা ও বিগত দিনের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় জনসাধারণের মুখে মুখে তার নাম।
রায়পুরা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, বর্তমানে নরসিংদী-৫ আসনের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর রফিকুল আমিন ভূঁইয়া রুহেল। জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কারণে তিনি দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনাগুলো তৃণমূলে পৌঁছে দিতে সহায়তা করছেন। চব্বিশের জুলাই আন্দোলনেও রায়পুরায় অগ্রণী ভুমিকা রাখেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা নেওয়া তরুণ এই নেতা বর্তমানে বিএনপির ৩১ দফা প্রচারের মাধ্যমে তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
জানা গেছে, নরসিংদী-৫ আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থীর মধ্যে রফিকুল আমিন ভূঁইয়া রুহেল অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী। যিনি তার সাংগঠনিক দক্ষতায় ইতোমধ্যে নিজের অবস্থানকে মজবুত করে নিয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে নরসিংদীর রায়পুরা থানার তৃণমূলে নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তরুণদের মধ্যে দলীয় আদর্শ প্রচারে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কর্মশালা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন ছাড়াও কেন্দ্র ঘোষিত মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, পদযাত্রা ও গণঅবস্থান কর্মসূচি তৃণমূল পর্যায়ে বাস্তবায়ন করেছেন। রাজনৈতিক দমন-পীড়নের সময়ও তিনি সাহসিকতার সঙ্গে মাঠে ভূমিকা রেখেছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে ২০১৪ সালে রায়পুরায় কালোপতাকা মিছিলকালে গ্রেফতার হন রুহেল। এরআগে মিছিলে ১৫৯ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। পরে রুহেলকে প্রধান আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে দুইটি মামলা করা হয়।
জানা যায়, পারিবারিকভাবেই রুহেলের রাজনীতির হাতেখড়ি। তিনি বনানী বিদ্যানিকেতন থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও ঢাকা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্টার মার্ক পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কে একাডেমিক স্কলারশিপ ও ডিন তালিকাভূক্ত হন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ডেলওয়ারের উইলমিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্টে ডিন তালিকাভুক্ত ও স্কলারশিপ নিয়ে স্নাতক অর্জন করেন। এরপর তিনি দেশে ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। বর্তমানে নরংসিদী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে নরসিংদী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সদস্য, রায়পুরা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ রয়েছে রফিকুল আমিন ভূঁইয়া রুহেলের। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের ক্যাম্পেইনে চিফ ইলেকশন কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রফিকুল আমিন ভূঁইয়ার রয়েছে পারিবারিক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ইতিহাস। তার বাবা মরহুম মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনয়নে প্রথমবারের জন্য বিলুপ্ত ঢাকা-২৬ (বর্তমান নরসিংদী-৫ রায়পুরা) আসনের এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৬-১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ ও কৃষি উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮-১৯৯০ সালে তিনি নরসিংদী জেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নিজের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের বিষয়ে রফিকুল আমিন ভূঁইয়া রুহেল বলেন, “আমি বিশ্বাস করি গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং অর্থনৈতিক সাম্য-একটি রাষ্ট্রের প্রধান ভিত্তি হওয়া উচিত। বিএনপি যে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনতার অধিকারকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়েছে, সেই চেতনার একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে আমি রাজনীতি করি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা শুধু রাজনৈতিক নীতি নয়, বরং একটি আদর্শিক প্রতিশ্রুতি ও মানুষের অধিকার রক্ষার প্রতীক হিসেবে মনে করি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই- একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক, স্বচ্ছ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, যেখানে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও সামাজিক সমতা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।”
কেকে/এজে