মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন আহত হয়েছে। রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের ছোট রায়পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন গজারিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক, ছোট রায়পাড়া গ্রামের মৃত হায়দার আলী বেপারীর ছেলে জসিম উদ্দিন (৪৮) ও একই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মুরাদ (২৭)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জসিম উদ্দিন ও মুরাদ সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই। একটি জমি বিক্রির টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ ঘটনার জের ধরে রোববার সকাল ১১টার দিকে আড়ালিয়া গ্রামের রাস্তায় মুরাদ চড়াও হয় জসিম উদ্দিনের ওপর। এ সময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে দুইজন। মারামারির একপর্যায়ে জসিম উদ্দিন রাস্তার নিচে পড়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মুরাদের বাবা আব্দুস সাত্তার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। মুরাদ একসময় ছাত্রলীগ করতো, এখন সে যুবলীগ করে। দীর্ঘদিন ধরে সে আমার কাছে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে আসছিল। বিগত সরকারের আমলে তার কারণে আমি এলাকায় থাকতে পারতাম না। সম্প্রতি আমি এলাকায় ফিরে আসলে মুরাদ দাবিকৃত চাঁদার টাকার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু আমি তাকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আজকে আমাকে মারধর করে।’
‘মুরাদ এবং তার লোকজন আমাকে মারধর করে রাস্তার নিচে ফেলে দেয়। আমার হাত ভেঙে গেছে, আমি মাথায় গুরতর আঘাত পেয়েছি।’
মুরাদ বলেন, ‘জসিম আমার ফুফাতো ভাই, আমি কেন তার কাছে চাঁদা চাইতে যাব? জমি লিখে দেওয়ার নাম করে জসিম আমাদের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়েছে। তারপর দীর্ঘ ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও সে আমাদের জমি লিখে দিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য থেকে শুরু করে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সবাই বিষয়টি জানে। টাকা ফেরত না দিতে জসিম দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিল।’
‘সম্প্রতি সে এলাকায় এসেছে। আজকে রাস্তায় দেখা হলে আমি মূলত তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে টাকা কবে দিবে। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাকে মারধর শুরু করে। আমাকে মারধর করার সময় সে রাস্তার পাশের খালে পড়ে সামান্য আহত হয়।’
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, জসিম উদ্দিনকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার একটি হাত ভেঙে গেছে এবং মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এ রকম একটি খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’