বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেড মিল্কভিটা খামারিদের উৎপাদিত দুধের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা বৃদ্ধিসহ ৬ দফা দাবিতে দুধ সরবাহ বন্ধের ঘোষণা করেছে সমবায়ীরা।
রোববার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি দুগ্ধ কারখানায় (মিল্কভিটা) সমবায়ীরা দুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন।
রেশমবাড়ী দুধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড মিল্কভিটা খামারিদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রাথমিক সমবায় সমিতির নেতারা ৭ দিনের সময়সীমা (আলটিমেটাম) দিয়ে বলেন, প্রতি লিটার দুধে ১০ টাকা না বাড়ালে মিল্কভিটায় পুরোপুরি দুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এছাড়াও দুধের দাম ১০ টাকা বৃদ্ধি করা, মিল্কভিটার দূর্নীতি, মিল্কভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অপসারণ, নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনসহ ৬ দফা দাবি জানানো হয়। দাবি না মানা হলে আজ থেকে দুধ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন সমবায়ীরা। এর ধারাবাহিকতা আজ সকাল থেকে মিল্কভিটায় দুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন সমবায় সমিতির উৎপাদিত দুধগুলো স্থানীয় ঘোষদের নিকট বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় দুধ উৎপাদনে খরচ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সে কারণে আমার মিল্কভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর বার বার আবেদন দিলেও সে কোন ব্যবস্থা নেননি। তিনি উল্টো আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। শুধু তাই না মিল্কভিটার কিছু অসৎ কর্মকর্তার কারণে আজ আমার দুধের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না।
জানা যায়, মিল্কভিটায় নানা অজুহাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ালেও প্রাথমিক সমবায়ীদের দুধের দাম দিচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা মাত্র। অথচ এ দুধই তারা বিক্রি করছে ১০০ টাকা লিটার। এদিকে ক্রমাগতভাবে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় দুধ উৎপাদনে খরচ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। অপরদিকে প্রান্তিক খামারিদের দুধের দাম থেকে প্রতি লিটারে ৬০ পয়সা করে গবাদিপশুর জাত উন্নতকরণ ও চিকিৎসা বাবদ মিল্কভিটা কেটে রাখলেও সেসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। সেই সাথে মিল্কভিটার শেয়ার বাবদ প্রতি লিটারে ৪০ পয়সা করে রাখলেও সেসবের কোট সার্টিফিকেট দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এর ফলে মিল্কভিটায় দুধ সরবরাহে আগ্রহ কমছে প্রান্তিক খামারিদের। সিরাজগঞ্জ-পাবনা মিল্কশেড এরিয়ায় পাঁচশত খামারে প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হলেও মিল্কভিটা মাত্র ২০ হাজার লিটার দুধ নেন।
কেকে/এআর