বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫,
৩০ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: চাকসু নির্বাচনে একাধিক প্যানেলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ       নারায়ণগঞ্জে অনেক বড় গডফাদার ছিল : আসিফ নজরুল      চাকসু নির্বাচনে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে : সিইসি      পার্বত্য অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আনসার-ভিডিপি অবিচল অঙ্গীকার : মহাপরিচালক      বিকাশ-নগদ-রকেটের মধ্যে টাকা লেনদেনের খরচ কত হবে      বুধবারের উল্লেখযোগ্য সংবাদ      দেশের ক্রিকেটে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, পুরুষদের সমান ভাতা পাবেন নারীরা      
বিবিধ
রেলওয়ে স্টেশনেই কেটে গেল মা-মেয়ের ৫৪ বছর
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫, ৬:৪৮ পিএম
খোদেজা বেগম ও তার মেয়ে বাতাসি।ছবি : প্রতিনিধি

খোদেজা বেগম ও তার মেয়ে বাতাসি।ছবি : প্রতিনিধি

একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনের বারান্দায় ৫৪ বছর ধরে বসবাস করছেন সত্তরউর্ধ্ব বৃদ্ধ খোদেজা বেগম। যুদ্ধের আগে খেজুরের রস খেয়ে স্বামী মারা যাওয়ার পর যুদ্ধশেষে জীবন যুদ্ধে নেমে পড়েন খোদেজা বেগম। 

মেয়েকে নিয়ে ১৯৭১ সালের শেষের দিকে রাজবাড়ী জেলার পাংশা বাগদুলি গ্রাম ছেড়ে জীবিকার উদ্দেশে চলে আসেন কুষ্টিয়ার কোর্ট স্টেশনে। সেই থেকে শুরু মেয়েকে নিয়ে তার জীবন সংগ্রাম। খেয়ে না খেয়ে এই ষ্টেশনের বারান্দায় পার করেছেন দিন-রাত। খোদেজা বেগম মেয়ে বাতাসির বয়স সঠিকভাবে বলতে না পারলেও জানালেন কুষ্টিয়ায় যখন আসেন তখন মেয়ে কোলের বাচ্চা। বছর খানেক হবে।

এরপর থেকেই এই স্টেশনের আলো বাতাসেই বেড়ে উঠেছেন বাতাসি। স্থানীয়রা এখন তাকে বাতাসি পাগলী নামেই চেনে। কখনো স্টেশনের পূর্ব দিকে আবার কখনো পশ্চিম দিকের চায়ের দোকানে গল্প নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। দিনে ৭ কাপ চা পান করা বাতাসি বেগমের নিত্য দিনের অভ্যাস। কোর্ট স্টেশনে ঝাড়–দিয়ে আর মা খোদেজা বেগমের ভিক্ষার টাকা দিয়ে চলে তাদের দুইজনের সংসার।

বয়সের ভারে ঠিকমত কথা বলতে পারেন না খোদেজা বেগম। তবুও অস্পষ্ট কথায় বলেন,যুদ্ধের সময় ফ্যান-পানি খাইয়ে দিন কাটায়ছি। যুদ্ধ শেষ হলিই মিয়াডা নিয়ে চলি আসি কুষ্টিয়া কোট স্টেশনে। মিয়া নিয়েই কাজ কাম করতাম আর এ স্টেশনে রাত কাটাতাম। জীবনের সাথে যুদ্ধ করে রাতে থাকতে হতো এ স্টেশনে। কথা বলতে বলতে গলা ধরে আসলে অনেকক্ষন চুপ থাকেন বৃদ্ধ খোদেজা বেগম। 

এরপর প্রতিবেদককে জিজ্ঞাসা করেন, ‘বাবা মরার আগে ভাতা কার্ড পামু-নি। ভাতা কার্ড কারে কয় বাবা। আর আমি তো ভোট দিইনে,ভোটার হতি হয় কেম্বা বাবা।’

এ সময় খোদেজা বেগম আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘মিয়াডারে নিয়া চিন্তা। আমি নাই মিয়াডারে পাহারা দিয়ে গেলাম। আমার তো মরনের টাইম হয়ছে। বাতাসির আল্লছাড়া উপায় নাই। এ ষ্টেশন আমার এখন মাথা গুজার ঠায়। ধুলা ময়লা নিয়ে পড়ে থাকি। এই ডা যেনো না হারায় বাবা।’

বাতাসির সাথে কথা হলে বলেন, ‘আমার একটা ঘরের ব্যবস্থা করলি আমি ঘরে থাকতি পারতাম। সেই ছোট কালে আইছি। আজও ঘর হলোনা। আর আমারে ঘর দিবি কিডা। আমি তো ভোটার না। কেম্বা করে ভোটার হবো সমবাদিক।’

কোর্ট ষ্টেশনের সর্দার মুকুল বলেন, আমার বাবা ছিলেন সর্দার। আমি ও সর্দারগিরি করছি। আমি সেই ছোট বেলা থেকে মা মেয়েকে দেখছি। ওরা জীবনে মরার আগে ঘর দেখে যেতে পারলো না।

ষ্টেশনে উপর বই ও পত্রিকা বিক্রেতা কামাল বলেন, আমিও প্রায় ৩২ বৎসর ব্যবসা করছি। এখানেই দেখে গেলাম তাদের। তবে তাদের মা-মেয়ের মাঝে কোনো খারাপ কিছু দেখলাম না। এখানেই কাটিয়ে দিচ্ছে এতোগুলো বছর। তাদের  দেখার কেউ নেই। সমাজের উচ্চবিত্তরা একটু সহায়তা করলে এরা একটু ভালো থাকতে পারতো। 

কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন মাস্টার ইতি আরা বলেন, বাতাসি খুব ভালো মেয়ে। তার মা ও খুব ভালো মানুষ। জোরে কথা বলে না। তাদের আচরণ ভালো। আমরা চাই সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসুক এবং তাদের মত মানুষকে সহযোগিতা করুক।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  কুষ্টিয়া   রেলওয়ে স্টেশন   মানবেতর জীবন  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া, কাজ বন্ধের নির্দেশ ইউএনওর
ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ববি হাজ্জাজের আত্মপ্রকাশ
বাঞ্ছারামপুরে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পে সেবা পেলেন ৪৮৩ জন
১৫ বছর পর হত্যা মামলার দুই সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতার
বক্তব্য দিতে গিয়ে কাঁদলেন বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর

সর্বাধিক পঠিত

হেরিংবন সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে ৬ গ্রামের শিক্ষার্থী
রিপন মিয়াকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল এলাকাবাসী
ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, নীরব প্রশাসন
প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে শাকসবজির বীজ ও সার বিতরণ
‘মার্চ টু যমুনা’ ঘোষণা দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন শিক্ষকরা
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close