কুষ্টিয়ায় মোড়ে মোড়ে তল্লাশি, আটক ৩০
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
🕐 ৯:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২৪
কুষ্টিয়ায় দুপুরের পর হঠাৎ করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা বেড়ে যায়। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির গাড়ির মহড়াও চলে। তাদের সঙ্গে থাকেন ম্যাজিষ্ট্রেট। বিকেলে চলে মোড়ে মোড়ে তল্লাশি। কাউকে সন্দেহ হলেই আটক করে নেওয়া হয় থানায়। এভাবে বিকেল ছয়টা পর্যন্ত অন্তত ৩০ জনকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। তাদের অধিকাংশই ছাত্র। রয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। আর এতেই কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়নি।
সোমবার বেলা তিনটার দিকে শহরের চৌড়হাস মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। এনিয়ে সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্মসূচি পালনের জন্য কুষ্টিয়া ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে পোস্ট দেখা যায়। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে সারাদেশে শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করার কথা ছিল। এ কর্মসূচি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বেলা এগারটার দিকে কুষ্টিয়া শহরে পুলিশ বিজিবি র্যাবের যৌথ মহড়া চলে। দুপুর দুইটার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করে। মোল্লা তেঘরিয়া মোড়, চৌড়হাস মোড়, মজমপুর রেলগেট, সাদ্দাম বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র্যাব বিজিবি ও পুলিশের একাধিক গাড়ির টহল দেখা যায়। তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের দুজন ম্যাজিষ্ট্রেটও ছিলেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে চৌড়হাস মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে র্যাব বিজিবি ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
বাস থেকে কোনো যাত্রী নামলে তাদের ছাত্র মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ ও ব্রাগ তল্লাশি করা হয়। সন্দেহ হলে তাদের আটক করে গাড়িতে করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় নেওয়া হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন এক সাথে বাস থেকে নামলে পুলিশ তাদের আটক করে ব্যাগ তল্লাশি করে। পরে পাঁচ মিনিট পর গাড়িতে করে তাদের থানায় নেওয়া হয়।
গাড়িতে তোলার সময় গণমাধ্যম কর্মীদের একজন জানান, তারা দুইজন শহরে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন। কিন্তু পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে চৌড়হাস মোড় এলাকায় অবস্থান নিতে দেখা যায়।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবদুল আলীম বলেন, এখন পর্যন্ত ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীও রয়েছে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। যাদেরকে আটক করা হযেছে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাত্রদের ছেড়ে দেওয়া হবে। কোনো ছাত্রকে আটক করা হবে না। তবে কোনো দুষ্কৃতিকারীর তথ্য প্রমাণ পেলে তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে।