বাংলাদেশ এবং হাসিনাকে নিয়ে উভয় সংকটে ভারত
অনলাইন ডেস্ক
🕐 ১:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৪
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ থেকে বিশৃঙ্খলভাবে পালিয়ে তড়িঘড়ি করে দিল্লির কাছে একটি সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করার প্রায় এক মাস হয়ে গেছে। টানা ছাত্র আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিলে গত ৫ আগস্ট নাটকীয়ভাবে হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি ওই দিনই সামরিক বিমানে করে ভারতে পালিয়ে যান।
প্রাথমিকভাবে তিনি অল্প সময়ের জন্য ভারতে থাকবেন বলে আশা করা হলেও এখন শোনা যাচ্ছে তার যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেয়ার প্রচেষ্টা এখনো পর্যন্ত সফল হয়নি। ভারতে হাসিনার অব্যাহত উপস্থিতি ঢাকার নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দিল্লির জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
ভারতের কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী একটি দেশ নয়। এটি একটি কৌশলগত অংশীদার এবং ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘনিষ্ঠ মিত্র, বিশেষ করে সেভেন সিস্টার নামে পরিচিত দেশটির উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর জন্য।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে সহজে প্রবেশ করতে পারে।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভারত এই জাতিগত স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোকে দমন করে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে কয়েকটি সীমান্ত বিরোধও বন্ধুত্বপূর্ণভাবে মিমাংসা করেন হাসিনা।
দুই দেশের সম্পর্কের মূল বিষয় সীমান্ত নিরাপত্তা থাকলেও এর আর্থিক দিকও রয়েছে। হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ও সংযোগ বিকাশিত হয়েছে। ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সড়ক, নদী ও রেলপথ ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। ২০১০ সাল থেকে ভারত অবকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে সাত বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ দিয়েছে।
তবে মিত্র হাসিনার আকস্মিক পতনের মানে হলো বাংলাদেশে ভারতের যেসব স্বার্থ আছে এসব বজায় রাখতে এখন দিল্লিকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। ঢাকার সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, এটি এই অর্থে একটি ধাক্কা যে আমাদের আশপাশে যেকোনো অশান্তি সবসময়ই অবাঞ্ছিত।