ঢাকা, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

যাতায়াতে অনুপযোগী সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক

মো. রিয়াদুল ইসলাম, নোবিপ্রবি
🕐 ৩:০২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৪

যাতায়াতে অনুপযোগী সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক

জায়গায় জায়গায় ভাঙন ও বড় বড় গর্ত সৃষ্টির ফলে নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) যাওয়ার রাস্তাটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়ছে।

জানা যায়, রাস্তাটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং স্থানীয় জনগণ ও পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর এলাকার মানুষসহ প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যাওয়ার একমাত্র রাস্তা হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। কাজেই কখনো বাস, কখনো রিক্সা আবার কখনো সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সর্বদা শিক্ষার্থীদের চলাচল থাকে এ পথে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে বেহাল থাকা রাস্তাটি সম্প্রতি বন্যার কারণে চলাচলে একদমই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তা জুড়ে অগণিত গর্ত, ফাটল ও ভাঙন দেখা দিয়েছে যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের দিকেও রাস্তার অনেক অংশ হেলে গিয়েছে। যখন তখন ধসে পড়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। রাস্তাটি পর্যাপ্ত প্রশস্ত না হওয়ায় দুটো বাস একসাথে ক্রস করার সময় বেশিরভাগ সময়ই বেগ পোহাতে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, এই বেহাল রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একটি দ্বিতল বাস রাস্তার পাশের একটি খাদে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। তবে বাসটিতে তখন কোনো শিক্ষার্থী না থাকায় কোনো হতাহত হয়নি। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বৃহত্তর নোয়াখালীর বিভিন্ন জায়গায় বন্যার্তদের ত্রাণ পৌছে দেওয়ার সময়ও ত্রাণ বহনকারী কয়েকটি গাড়ি এই রাস্তায় উল্টে যায়।

নোবিপ্রবি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান জনি বলেন, গত ২৪ আগস্ট আমি এই রাস্তাটি দিয়ে বাংলাবাজারে ত্রাণ দিতে বের হই। যাত্রাপথে কিছু দূর যেতেই আমাদের আমাদের রিকশার ২০ গজ সামনেই একটি ত্রাণবাহী রিকশা রাস্তার খাদে পড়ে দূর্ঘটনার স্বীকার হয়। প্রায় সময়েই এই রাস্তায় চলাচলের সময় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা ভোগান্তির স্বীকার হয় বলে জানান এই শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, রাস্তার চরম অব্যবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সেই সাথে এই রাস্তায় যাতায়াত যন্ত্রণাদায়ক ও ভীতিকরও বটে। রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন যথাসময়ে উপস্থিত হতে সমস্যা পোহাতে হয়। আমরা স্থানীয় প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাই, সোনাপুর টু বিশ্ববিদ্যালয় রোডের এই দুরবস্থা দূর করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাস্তাটি সংস্কার করে চার লেনে উন্নীত করা।

বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস রিয়া বলেন, বর্তমানে বন্যার জন্য রাস্তাটির অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেছে। দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। জরাজীর্ণ সড়কপথে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। নোবিপ্রবির দ্বিতল বাসগুলো দিয়ে এই রাস্তায় যাওয়া মানে মরন ঢেকে আনা। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রাণহানির শঙ্কার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ যানবাহনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোর যন্ত্রাংশের। এক কথায় বলতে গেলে সোনাপুর জিরো পয়েন্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি যান চলাচলের একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

এ নিয়ে নোবিপ্রবির প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা জেষ্ঠ অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সোনাপুর হতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছি আমরা। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এবিষয়ে নোয়াখালীর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, রাস্তাটির জন্য ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ বন্যা চলে আসায় ঠিকাদার কাজ করতে পারেনি। এখন পুরোপুরিভাবে কাজ চলবে।

 
Electronic Paper