তদন্তের আগেই কেন গ্রেফতার রায়হান, প্রশ্ন সহপাঠীদের
শাহরিয়ার আলম, জাবি
🕐 ৫:৫৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
গণপিটুনিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার নিহত হওয়ার ঘটনায় তদন্তের আগেই তড়িঘড়ি করে মামলা ও এক শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পূর্বের মামলা প্রত্যাহার ও সুষ্ঠু তদন্তসহ ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রঙ্গণে এ মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ৬ দফা দাবির লিখিত স্মারক দেন।
ইংরেজি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বাপ্পির সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বলেন, সুদীপ্ত শাহীন নিজে হামলাকারী হয়ে কিভাবে মামলার বাদী হয়? আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ২ মাসেও কাউকে আইনের আওতায় আনা হয় নাই। ক্যাম্পাসে তারা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অপরদিকে শামীম মোল্লাকে গণপিটুনির ঘটনায় তদন্ত ছাড়াই মামলা হলো। আমাদের দাবি হলো -যে অন্যায় করেনি তাকে যেন শাস্তি দেয়া না হয়। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের মাত্রা-অনুযায়ী শান্তি নিশ্চিত করা, শামীম মোল্লাকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর পরবর্তী নিরাপত্তা অফিসের গাফিলতির ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর ঘটে যাওয়া ঘটনার তদন্ত নিশ্চিত করা, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনের বিতর্কিত কর্মকান্ড বিশ্লেষণপূর্বক নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া, জুলাইয়ের গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত আসামী সুদীপ্ত শাহীন কর্তৃক এই বিতর্কিত মামলা অতিদ্রুত প্রত্যাহার এবং জুলাই-আগস্ট মাসে হামলার ঘটনায় জড়িত সকল শিক্ষক, কর্মচারী, এবং শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কারসহ দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসা প্রভৃতি।
ইংরেজি বিভাগ ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও রায়হানের সহপাঠী সিয়াম তালুকদার বলেন, এই মামলাকে অনেকটা বিতর্কিত বলা চলে। মামলা দেয়ার পূর্বে একটা সুষ্ঠু তদন্তের দরকার ছিক। যিনি এ ঘটনায় মামলা করেছেন, তিনিও ২ টা হত্যমামলার আসামী। আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। প্রকৃত অপরাধীরা সামনে নিয়ে আসা হোক। আমরা চাই, লঘু পাপে গুরু দণ্ড না পাক। বিনাদোষে কেউ সাজা না পাক।
রায়হানের সহপাঠী তাহমিনা বিনতে তৃষা বলেন, ১৮ তারিখে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি চাই। আমাদের বন্ধু রায়হানকে সামনে রেখে অন্য কাউকে আড়াল করা হয়েছে। তদন্ত ছাড়া যে বহিষ্কার ও মামলা করা হয়েছে, আমরা এ ব্যবস্থার উপর কিভাবে আস্থা রাখবো? আমদের প্রশ্ন, তাকে হাসপাতালে না নিয়ে কেন দেরি করা হলো৷ যার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা রয়েছে সে কীভাবে মামলার বাদী হয়? আমরা এ মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাই৷
রায়হানের মা রেহেনা পারভীন, আমার ছেলে যতটুকু অপরাধ করেছে, তার ততটুকু শাস্তি হোক৷ বাকিদের আড়াল করে রায়হানকে শাস্তি দেয়া হবে এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। রায়হান আমার পরিবারের একমাত্র অবলম্বন৷ তাকে ছাড়া আমরা বেঁচে থাকতে পারব না।