ঢাকা, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

উপাচার্যসহ জাবি প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষকরা

জাবি প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৩, ২০২৪

উপাচার্যসহ জাবি প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষকরা

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমসহ প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা করেছেন শিক্ষকদের একাংশ।

শনিবার বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকেরা। সম্মেলন শেষে চার দফা দাবিও জানান তাঁরা।

তাঁদের দাবিগুলো হলো- ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করা, হলগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীমুক্ত করতে হবে। উপাচার্য, সহ-উপাচার্যদ্বয়, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে। ১৫ জুলাই রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা যারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নৃশংসভাবে আঘাত করেছে তাদের বিচার করতে হবে। অনতিবিলম্বে আরিফ সোহেল ও সাব্বির রহমান লিয়নসহ অন্যায্যভাবে গ্রেফতার হওয়া সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দিয়ে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি, প্রশাসনের নির্দেশেই আক্রমণ করে শিক্ষার্থীদের আহত করা হয়েছে। সংগত কারণে এই প্রশাসন একটা লোকদেখানো তদন্ত কমিটি করে জাতিকে বোঝাতে চাচ্ছে তারা কী করছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী ঠিক যেভাবে মায়াকান্না করছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও তাই করছে। সংগত কারণে এই প্রশাসনকে আমরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী বলেন, আমরা এর আগেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন করেছি। এবারো শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পক্ষে দাঁড়িয়েছি। গত ১৫ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলার ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি।

এসময় দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, আমরা এ সরকারকে আর বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করি না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ছাত্রদের উপর তার পেটুয়া বাহিনী, পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছেন, আবার নিজেই বলছেন ছাত্রদেরকে ধরবেন না। মামলার এজাহারে বলা হচ্ছে পুলিশ গুলি করেনি, অন্য কেউ গুলি করেছে, অথচ আমরা স্পষ্ট দেখেছি কারা গুলি করেছে। আমরা আর এসব বিশ্বাস করি না।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক সামছুল আলম, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কলা ও মানবীকি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক শিবলী নোমান ও সালমা সাবিহা প্রমুখ।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেলের জামিন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার বড় ভাই আলী জুয়েল। তিনি বলেন, মহামান্য আদালত আরিফের জামিন মঞ্জুর করেছে।

 
Electronic Paper