ঢাকা, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সরকারি বাহিনী অতীতের সকল স্বৈরাচারকে হার মানিয়েছে : শাবি শিক্ষকবৃন্দ

শাবি প্রতিনিধি
🕐 ৫:১৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০২, ২০২৪

সরকারি বাহিনী অতীতের সকল স্বৈরাচারকে হার মানিয়েছে : শাবি শিক্ষকবৃন্দ

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের চলমান অহিংস আন্দোলনে সরকারি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যা, গুম ও নির্যাতন অতীতের সকল স্বৈরাচারকে হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল শিক্ষক ফোরাম’।

গত বুধবার (৩১ জুলাই) ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিমের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চলমান সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের চলমান অহিংস আন্দোলনে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে "মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল শিক্ষক ফোরাম" এর শিক্ষকবৃন্দ তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

শিক্ষকবৃন্দ মনে করেন, ছাত্রছাত্রীরা গত কয়েকদিন ধরে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাসের দাবিতে খুব শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল যা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছিল। সমাজের গুণীজনেরাও তাদের চলমান আন্দোলনকে যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাসের পক্ষে মতামত দিয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের নিয়ে সরকার প্রধান ও মন্ত্রীদের বিরূপ মন্তব্যে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুন্দ হয়ে ওঠে এবং “তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার, কে বলেছে? কে বলেছে? স্বৈরাচার, স্বৈরাচার” শ্লোগানে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।

দুঃখের বিষয় শাসকশ্রেণী ও তাদের অনুসারীরা এই প্রতিবাদী স্লোগানের মর্মার্থ অনুধাবন না করে স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে বক্তব্য ও বিবৃতি অব্যাহত রাখেন। সেই সুযোগে সন্ত্রাসীরা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশে হামলা করে। ফলে আন্দোলনকারীরা ১৬ই জুলাই সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। আন্দোলনকারীদের ডাকে সর্বস্তরের ছাত্রছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ভীত হয়ে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী একযোগে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং গুলি করে।

গত ১৬ই জুলাই থেকে অদ্যবধি শত শত ছাত্রদ্বাত্রী ও শিক্ষককে আহত করেছে এবং কয়েকশত তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আমরা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রিরা সহপাঠীদের উপর সরকারি বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত হামলা, গুম, খুন ও নির্বিচারে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ও বিচারের দাবিতে অদ্য ৩১শে জুলাই মার্চ ফর জাস্টিস' ঘোষণা করে।

পরিতাপের বিষয় হল ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার পেছন দিক থেকে অতর্কিত হামলা করে কয়েকশত ছাত্রছাত্রীকে আহত করেছে এবং গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। সরকারি বাহিনীর এহেন কর্মকাণ্ডে আমরা হতভম্ব ও বাকরুদ্ধ। সরকারী বাহিনী নির্বিচারে গত কয়েক দিনে যেভাবে হত্যা, গুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে তা অতীতের সকল স্বৈরাচারকে হার মানিয়েছে। আমরা শিক্ষক সমাজ এই নৃশংস ও বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি।

আমরা ছাত্রছাত্রীদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। একইসাথে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবিও জানান শিক্ষকরা।

 

 
Electronic Paper