বিজিএমইএ’র কমিটি ভাঙতে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম
মাহফুজুল আলম খোকন
🕐 ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৭, ২০২৪
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ’র নির্বাহী কমিটি ভাঙতে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা।
আজ বুধবার ১৭ নং সেক্টর বিজিএমইএ’র নিজস্ব ভবনে সংগঠনটির নির্বাহী কমিটির সহ-সভাতি ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বর্তমান কমিটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ কমিটি আখ্যায়িত ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, বর্তমান কমিটি একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে করা হয়েছে। এ সময় গনমাধ্যমকে সংগঠনের সদস্যদের দেয়া স্মারকলিপি পড়ে শুনান বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মো. সিহাব উদ্দৌজা চৌধুরী।
স্মারকলিপিতে বলা হয়
১. আমরা সকলে অবগত আছি বৰ্তমান বিজিএমইএ’র সভাপতি এসএম মান্নান (কচি) ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। অত্যন্ত দুঃখজনক যে, গত ৪ আগস্ট মিরপুর-১০ গোল চত্বরে ছাত্র-জনতার ওপর আমাদের সভাপতি এসএম মান্নান কচি নিজ অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণ করেন।
২. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দমন-পীড়ন ও হত্যায় উত্তরা এবং মিরপুরেকচির নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী দমনপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞে মূল ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। এ কথা সমগ্র গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
৩. ২০২৪ সালে বিজিএমইএ পর্ষদ নির্বাচনে এসএম আব্দুল মান্নান (কচি) এবং তার দল অস্ত্র হাতে ক্যাডার বাহিনী কর্তৃক প্রহসনমূলক নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করেন। এই ভোট চুরিতে আওয়ামী লীগ সাবেক সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী, মহিউদ্দিন, আ. লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামকে লজ্জাজনকভাবে নিজ-নিজ বাহিনীসহ ভোট কারচুপিতে সরাসরি নিজ হাতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। যা দলীয় সভাপতি সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সিও এ দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।
৪. অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার চলমান ছাত্র আন্দোলনে কয়েকশত ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার পরেও বর্তমান বোর্ড এবং প্রেসিডেন্ট একটি শোক বার্তাও প্রেরণ করেনি।
৫. গত কয়েক সপ্তাহে বিজিএমইএ’র মূল দায়িত্ব তথা ব্যবসা পরিচালনায় কার্যকর নির্দেশনা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দেয় ।
৬. আজ মাসের ৭ তারিখ এক্সপোর্ট, প্রডাকশন, ব্যাংকিং ও পোর্টসহ সবকিছু গত ৩ সপ্তাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পরেও বেতন ও অন্যান্য ব্যাপারে সাধারণ সদস্যদের বিন্দুমাত্র দিকনির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন ।
৭. ঐতিহাসিক এই ছাত্র আন্দোলনে এবং গণজোয়ারে বর্তমান সভাপতি এবং নির্বাহী পরিষদ সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ভূমিকা পালন করায় তারা সম্পূর্ণ বোর্ড দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন।
৮. পূর্ববর্তী ও এই পর্ষদের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক কেলেঙ্কারি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার ব্যবসায়ীদের সংগঠনকে দলীয় এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহারসহ সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সাধারণ সদস্যদের চাপা ক্ষোভ থাকলেও পেশী-শক্তি ও ব্যবসায়ীক আক্রোশের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করেনি। এই অবস্থায় আমরা এই বোর্ডের উপর পূর্ণ অনাস্থা জ্ঞাপন করছি এবং তাদেরকে অবিলম্বে পদত্যাগপূর্বক বোর্ড ভেঙে দিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সৎ, দক্ষ ও অরাজনৈতিক বোর্ড গঠনপূর্বক দায়িত্ব হস্তান্তর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সর্বশেষ নানা বাকবিতণ্ডা শেষে বিকেল সাড়ে তিনটায় স্বারকলিপিটি গ্রহন করে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সকল সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে ব্যবসায়ী নেতারা বিজিএমইএ ভবন ত্যাগ করেন।