ঢাকা, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

লাভের আশায় পাটকাঠির যত্ন নিচ্ছেন চাষিরা

আবু নাসের হুসাইন, সালথা (ফরিদপুর)
🕐 ৭:৫২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০২৪

লাভের আশায় পাটকাঠির যত্ন নিচ্ছেন চাষিরা

পাটের উৎপাদন খরচের তুলনায় এবার ফরিদপুরের সালথায় পাটের ফলন ও দাম কিছুটা কম পাচ্ছেন চাষিরা। লাভের আশায় পাঠকাঠির যত্ন নিচ্ছেন তারা। এই পাটখড়ি বা পাটকাঠি এখন বিক্রি হবে চড়া দামে। আঁশ ছাড়িয়ে, ধুয়ে, রোদ ও বাতাসে শুকিয়ে এখন পাট ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। তবে শুধু আঁশ নয়, পাটকাঠিতেও স্বপ্ন দেখছেন তারা।

বাড়ির সামনের পাকা সড়ক কিংবা মাঠে-ঘাটে চলছে পাটকাঠি শুকানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ।

স্থানীয়রা জানান, কৃষক পাট ও পাটকাঠি শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত। তারা এখন পাটকাঠি বেশ যত্নের সঙ্গে মজুত করে রাখছেন। একশো আঁটি পাটকাঠি ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগে পাটকাঠির ব্যবহার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিল শুধু জ্বালানি হিসেবে। আর কিছু ভালো মানের পাটকাঠি পানের বরজের আর ঘরের বেড়া তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন আর মূল্যহীনভাবে পড়ে থাকে না পাটকাঠি। বিশ্ববাজারে পাটকাঠির চাহিদা বাড়ায় আঁশের পাশাপাশি কাঠির দামও ভালো পাওয়া যায়। অনেক কৃষক পাটের দাম খুব একটা না পেলেও পাটকাঠির দাম দিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

পাটচাষি ফরিদ মোল্যা বলেন, আপাতত চলছে পাট আঁশ ও পাটখড়ি শুকানোর কাজ। কয়েকদিন পরেই পাটকাঠি ক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা আসবে। এবার খরচের তুলনায় পাটের দাম কম। পাটখড়ি বিক্রি করে পুষিয়ে নিবো।

পাটচাষী রকমান শেখ ও আবুল হোসেন বলেন, প্রথমদিকে পাটের ফলন অনেক কম হয়েছে, সেজন্য উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তাই খরচের তুলনায় পাটের দাম কম পাচ্ছি। এখন বাজারে ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা দরে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মন পাট ৪ হাজার হলে চাষিদের কিছুটা লাভ হতো।

তারা আরও বলেন, পাটকাঠির দাম এবার ভালো আছে। তাই পাটপাঠির উপর গুরুত্ব দিয়ে যত্ন নিতে শুরু করেছি। কারণ এক বিঘা জমিতে এবার ১২ থেকে ১৫ মণের মত পাট ফলন হয়েছে। আর তা থেকে প্রায় ২ হাজার আঁটি পাটকাঠি বের হয়। প্রতি আঁটি পাটিকাঠি ৪ টাকা দরে বিক্রি করছি। এখন পাটকাঠি বিক্রি করে খরচ পুষিয়ে নিতে চাই।

স্থানীয় পাটকাঠি ব্যবসায়ীরা জানান, পাঁচ-ছয় বছর ধরে পাটকাঠি কিনে পাইকারি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ী আমাদের এলাকার পাটকাঠি কিনে ট্রাক, করিমন, ভ্যানগাড়িতে করে নিয়ে যায়। অনেকেই এখন পাটকাঠির ব্যবসা করছে।

বর্তমানে শুধু জ্বালানি ও বাড়ির কাজে নয়, এখন দেশে পাটকাঠি পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে কার্বন বা চারকোল। যা চীনসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। কার্বন পেপার, কম্পিউটার, ফটোকপির কালি, আতশবাজি, ফেসওয়াশের উপকরণ, প্রসাধনী পণ্য, মোবাইলের ব্যাটারি, খেতের সারসহ নানা কাজে এই কার্বন ব্যবহার হয়ে আসছে কয়েক বছর ধরে।

 
Electronic Paper