খাবার কিনতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সোহাগ
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
🕐 ৭:০৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩০, ২০২৪
২৪ বছরের যুবক কাদির হোসেন সোহাগ। ছিলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী। মা-ছোট ভাই মিলে তিনজনের সংসার। পিতাহীন সংসারে অসুস্থ্য মায়ের কষ্ট লাঘব করতে পড়া ছেড়ে একটি পার্সেল সার্ভিসে চাকরি নেন সে। থাকতেন রাজধানীর গোপীবাগ এলাকার একটি মেসে।
গত ২০ জুলাই রাত ৮টার দিকে খাবার কিনতে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ছুটে যায় ছোট ভাই সহিদুল ইসলাম। রাত সোয়া ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সোহাগ। পরদিন দুপুরে দেবিদ্বারের ভানী ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সোহাগের ছোট ভাই সহিদুল ইসলাম বলেন, ভাই গুলি খাওয়ার পর তার বন্ধুরা আমাকে ফোনে জানায়। আমি রাত ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছাই, গিয়ে দেখি ভাইয়ের বুকে ব্যান্ডেজ করা। আমাকে দেখে ভাই বলে, তুই এত রাতে এখানে কেন আসছিস। তুই মাকে দেখে রাখিস। রাত ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ভাই মারা যায়। ভাই আমাদের সংসার চালাত। বাবা ও ভাই হারিয়ে আমরা আজ নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
ছেলেকে হারিয়ে এক প্রকার শোকে স্তব্ধ সোহাগে মা নাছিমা বেগম। চুপ থেকে একটু পরপর বলে উঠেন তার ছেলের মৃত্যু ও তাদের জীবন কাহিনি। তিনি বলেন, আমার সোহাগ পরিবারের হাল ধরতে ঢাকায় পার্সেল সার্ভিসে কাজ করতো। শেষবার তার সাথে আমার ফোনে কথা হয়েছে শনিবার বিকালে। সে আমার কাছে কিছু টাকা চেয়েছে। মেসে নাকি সব খাবার শেষ হয়েছে গেছে। চারদিকে নাকি মারামারি হচ্ছে, এ কারণে কাজে যেতে পারে না ৪-৫ দিন। আমি সন্ধ্যায় আমার ছেলেরে ৫০০ টাকা দিয়েছি। এর পর কি হয়ে গেলো। আমার ছেলেটা এভাবে চলে গেলো।
নাছিমা বেগম আরো জানায়, আমার দুইটা ছেলে। তাদের বাবা নিখোঁজ ২১ বছরের বেশি সময়। তিনি নিখোঁজের পর আর শ্বশুড় বাড়ি যাইনি। বাপের বাড়িতে ধারদেনা করে একটু জায়গায় কিনে থাকছি। আমার সোহাগ আমার পবিবারটি চালাতো।
দেবিদ্বার থানার ওসি মো. নয়ন মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত দেবিদ্বার উপজেলায় তিনটি মরদেহ আসার খবর পেয়েছি। নিহতদের পরিবারগুলোর খোঁজ খবর রাখছি।