চিলড্রেন অব হ্যাভেন
ইচ্ছেডানা ডেস্ক
🕐 ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০১৮
তখন আমি ছোট। সারা দিন খেলি। রাত হলে ঘুমাই। শুক্রবার এলে দলবেঁধে সেলিমদের বাড়ি যাই ছবি দেখতে। ছবিতে নায়ক-নায়িকা আর খলনায়কদের হম্বিতম্বি দেখেই আমরা অভ্যস্ত। ছবিতে থাকে সব বড় বড় মানুষের কারবার। কিন্তু সেদিন ঘটে গেল এক কাণ্ড।
ছবিতে নায়ক-নায়িকা নেই। নেই বলতে আছে, কিন্তু ওরা তো ছোট। আমাদের সমান। ওরা আবার নায়ক-নায়িকা হয় কি করে? কিন্তু ছবিটি দেখে আমাদের মধ্যে একটা কি যেন ঘটে গেল। সবাই কথা বলতে চাইল ছবিটি নিয়ে। কিন্তু কেউ কথা খুজে পেল না। ছবিটি ছিল ‘চিলড্রেন অব হ্যাভেন’।
প্রথম দৃশ্যেই ছবির গল্প স্পষ্ট। মানে পুরো ছবির কাহিনী যেটিকে কেন্দ্র করে তা প্রথম দৃশ্যেই উঠে এসেছে। ক্লোজ শটে দেখা যাচ্ছে, একটি ছেঁড়া জুতা সেলাই হচ্ছে। একটু পর ধীরে ক্যামেরার ফ্রেম বাড়তে থাকে। দেখা যায়, একজন চর্মকার এবং তার সামনে দাঁড়ানো একটি ছেলে। খুব মনোযোগ দিয়ে চর্মকারের কাজ দেখছে আর যেন গমের ডাটার মতো হালকা হাওয়ায় দুলছে।
ইরানি শিশু দুটির একজন হলো আলী ও অন্যজন জোহরা। সম্পর্কে ভাইবোন। বেড়ে ওঠা এক দরিদ্র পরিবারে। এক দিন আলী তার বোন জোহরার জুতা হারিয়ে ফেলে। কিন্তু দুজনেই জুতা হারানোর খবরটি তাদের বাবাকে বলতে ভয় পায়। আলী ভাবতে থাকে কীভাবে এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
জোহরার স্কুল শুরু হতো সকালে আর আলীর দুপুরে। আলী তার জুতা জোহরার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয়। এ কারণে প্রতিদিনই তাদের ক্লাসে যেতে দেরি হতো। জোহরা আলীকে ভয় দেখায় তার জুতার ব্যবস্থা না করলে সে বাবাকে পুরো ব্যাপারটি বলে দেবে। এরই মধ্যে আলী তার স্কুলের দৌড় প্রতিযোগিতায় নাম দেয়। কারণ প্রতিযোগিতার তৃতীয় পুরস্কার ছিল এক জোড়া জুতা। কিন্তু বিধিবাম! প্রতিযোগিতায় আলী হয় প্রথম, তাই জুতা জোড়া আর পাওয়া হয়ে ওঠে না। এভাবে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হতে শুরু করে। বিশ্বময় আলোড়ন তোলা এই ছবিটির নির্মাণকাজে বাংলাদেশি মুদ্রায় বাজেট ছিল মাত্র ৮ লাখ টাকা। শুনলেও অবিশ্বাস্য মনে হয় না! হলেও এই সত্যি। ১৯৯৯ সালে ইরানি পরিচালক মাজিদ মাজদি নির্মিত মুক্তি পাওয়া চিলড্রেন অব হ্যাভেন ছবিটি বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হয় এবং সেরা বিদেশি ভাষার ছবি হিসেবে অস্কার প্রতিযোগিতার জন্য মনোনীত হয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228