ভূত যখন চেহারা পাল্টায়
মালেক ইমতিয়াজ
🕐 ৩:৫২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০২, ২০২১
স্যাম স্নিফ। বদমেজাজি এক রহস্য পুরুষ! নির্জন একটি বাড়িতে যার বসবাস। একা। নিরিবিলি বলতে যা বোঝায়, বাড়িটি একদম তাই। বাংলো বাড়ি। একরকম ভৌতিক একটা পরিবেশ বাড়ির চারপাশে বিরাজ করছে! গাছের ডালপালা কেমন অযতেœ নেতিয়ে পড়ছে এদিক সেদিক।
হাঁটুসমান বুনোঘাসের ডগাও তেমনি তরতরিয়ে বেড়ে ওঠছে। বাইরের লোকজনের মধ্যে এ বাড়িতে কেবল ডাকপিয়নই আসে। জরুরি চিঠিপত্র মেইলবক্সে রেখে যায়। এ বাড়িতে আর কারও আনাগোনা কেউ কখনো দেখেনি। কেন জানি এই বাড়িটার প্রতি আশপাশের কারও তেমন কোনো কৌতূহলও নেই।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে হাই হ্যালো ছাড়া আর কোনো যোগাযোগও নেই স্যামের। একরকম অন্তর্মুখী স্বভাবের জীবনযাপনে অভ্যস্ত। একা থাকার কারণে হয়তো মেজাজটাই এমন রুক্ষ!
পাড়াপড়শির সঙ্গে কালেভদ্রে দেখা হয় স্যামের। তাও আবার ইভিনিং ওয়াকে বের হলে। লোকজন স্যামকে যখন দেখতে পান, ততক্ষণে হয়তো দিনের আলো নিভে গেছে। কাজকর্ম, অফিস-আদালত থেকে আশপাশের লোকজন বাসায় ফিরেছেন। স্ট্রিটের ধারের সব বাড়িতে আলো জ্বলে উঠেছে। জানালার স্বচ্ছ পর্দা ছেদ করে আলোর বিচ্ছুরণ বাইরে এসে বিভা ছড়াচ্ছে। স্যাম তখন কাউবয় হ্যাট আর কালো ওভারকোট পরে বেরিয়ে পড়ে। পথিমধ্যে হয়তো দু’চারজন কর্মজীবী প্রতিবেশীর সঙ্গে স্যামের দেখা হয়। এতটুকুনই।
রুটিনমাফিক সে রাত্রে স্যাম হাঁটতে বেরিয়েছিল। পুরনো একটি কবরস্থানের পাশ দিয়ে আনমনে হেঁটে যাচ্ছে।
হঠাৎ ইঁদুরের মতো সাদা কিছু একটার উপস্থিতি টের পেল। দেখতে দেখতে ইঁদুরটি স্যামের পায়ের সামনে এসে হাজির। বিরক্ত হয়ে স্যাম ওটাকে জোরসে লাথি দিল।
অনেকটা ভেলকিবাজির মতোই লাথি খেয়ে ইঁদুরটি শূকরের আকৃতিতে রূপান্তরিত হলো। স্যাম পুরো বিষয়টিকে তখনও থোড়াই কেয়ার করছে। সাত-পাঁচ কিছু না ভেবে, শূকরটিকেও সে এবার দ্বিগুণ রাগে লাথি মারে।
এবার শূকরটিকে ভিন্নরূপে দেখা গেল। পলকে শূকরটি বিশাল একটি গরুর আকার ধারণ করল। এক নিমিষে যেন ঘটনাগুলো পর পর ঘটে যাচ্ছে!
স্যাম তাতেও একটু ঘাবড়ায়নি। মনের সুখে গরুটিকেও এবার লাথি মারে।
সঙ্গে সঙ্গে গরুটি বিশাল এক আকৃতি ধারণ করে। স্যাম তাতে প্রচ- ভয় পেয়ে যায়! এবার স্যাম চোখে সর্ষে দেখে। মনোবল হারিয়ে ফেলে সে। মুহূর্তে পুরো দৃশ্যপট তার সামনে আবারও ভেসে ওঠে। এদিকওদিক না তাকিয়ে এবার সোজা বাড়ির রাস্তা ধরে সে।
স্যাম হাঁপাতে হাঁপাতে বাড়ির দিকে দৌড়াতে থাকে। ভীত-সন্ত্রস্ত বদন। স্যামের চোখ দুটো ততক্ষণে আগুনের মতো লাল টকটকে হয়ে গেছে। রক্ত যেন এক্ষুনি ফিনকি দিয়ে বেরুবে।
শীর্ণকায় শরীরটা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে! বলা যায়, ভয়ের ছোটে স্যাম একেবারে কুঁকড়ে গেছে। আর এই ভয়টাই যেন তার কাছে মরণরূপে হাজির হয়েছে। মরার আগে সে কেবল চারটি শব্দ বিড়বিড় করেছিল, ‘নেভার কিক অ্যা গোস্ট’।
বিদেশি কাহিনী অবলম্বনে
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228