ঠাকুরবিলে আনন্দ
দ্বীন মোহাম্মাদ দুখু
🕐 ২:২৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
প্রচণ্ড তাপদাহে ফেটে চৌচির বিস্তীর্ণ মাঠ, যতদূর চোখ যায় ভাপ উঠা ধোঁয়ার মতো শুষ্ক ধুলো চোখের রেটিনায় আবছায়া ছবি তৈরি করে। কৃষক সুকৌশলে উৎপাদন করে পেঁয়াজ-রসুনসহ রকমারি রবি শস্য। বর্ষার আনাগোনা শুরু হতেই ঠাকুরবিল বাড়ন্ত কিশোরীর মতো দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। বিলের দু’ধার সবুজ হয়ে ওঠে কলমি লতা আর সুদীর্ঘ দূর্বাঘাসের ছোঁয়ায়। ভেসে আসা ধাপে ধাপে কস্তুরি ফুলের বেগুনি আভায় মন যেন নেচে ওঠে।
শাপলা ফুলের ছড়ানো লতা জালের মতো ছেয়ে যায় পুরো বিল। গলা জলে ডুবে থাকা আমন ধানের শীষ বাতাসে দুলতে দুলতে সাদা আর লাল শাপলা ফুলের সঙ্গে গড়ে তোলে গভীর মিতালি। দুপুরে তপ্ত রোদে স্বচ্ছ পানিতে খেলা করে পুঁটি মাছের ঝাঁক। পদ্ম, কলমি কস্তুরি কিংবা শাপলা ফুলও ঝলসানো রোদে মূর্ছা যায়, তখন শালুকের নেশায় দুরন্ত কিশোর কিশোরীরা এক বুক জলে টুপ করে ডুব দিয়ে এক কোচলা শালুক তুলে চোখ লাল করে ঘরে ফেরে।
দুপুর পেরিয়ে রোদের আনাগোনা কমতে না কমতেই ছুটে চলে ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট মাঝারি ডিঙি নৌকা। কোনো কোনো নৌকা থেকে ভেসে আসে সুরেলা সুর, যে সুর চিরচেনা পল্লীর নিজস্ব জয়গান। নৌকা বাইচ মাঝে মাঝে বিলের সৌন্দর্য আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। বিলের চারধারে জমে ওঠে বাহারি দোকানÑ কোনোটা খাবারের, কোনোটা ফুলের, কোনোটায় আবার সৌন্দর্য বর্ধনশীল প্রসাধনীর দোকান যেন পল্লী গাঁয়ের বিলুপ্তপ্রায় মেলার ছবি। ঠিক সাঁঝের আগে সূর্য যখন ঘরে ফেরে তখন সূর্যের লাল আভা বিলের পানিতে অপরূপ ছবি তৈরি করে, এই মনোহোরী রূপ দেখতে দেখতে দর্শনার্থীরাও ঘরে ফেরে। গ্রীষ্মের আগমনী গান বাজলেই ঠাকুরবিলের জল শুকিয়ে যাবে, অপরূপ বিলকে চেনা হবে দায়! এ ভেবেই দর্শনার্থীদের বুক কেঁপে ওঠে আর মনমরা হয়ে মৌসুমি ঠাকুরবিলের দিকে তাকিয়ে থাকে কালুখালীর আবেগপ্রবণ জনগোষ্ঠী।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228