ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিষাণ, ভালুক ও বুনোমোষ

আবেদীন জনী
🕐 ২:১৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১

বিষাণ, ভালুক ও বুনোমোষ

মাঠে ছাগল চরাচ্ছে বিষাণ। মাঠের পাশেই বন। বনে আছে ভয়ঙ্কর জীবজন্তু। বাঘ, ভালুক, হাতি, মোষ। আরও কত কী! ছাগলগুলো মজায় মজায় মচমচিয়ে ঘাস খাচ্ছে। লতাপাতা খাচ্ছে। মাঠের একপাশে গাছের ডালে বসে পাতার বাঁশি বাজাচ্ছে বিষাণ। আর নজর রাখছে ছাগলগুলোর দিকে। ওরা আবার বনের ভেতরে ঢুকে পড়ে কি না। কচি কচি সবুজ পাতার লোভে ঢুকতেও পারে। তখন বাঘ-ভালুকের সামনে পড়ে গেলে তো রক্ষা নেই। এজন্যই চোখে চোখে রাখতে হয় ছাগলগুলো। বাঘ-ভালুকের ভয় বিষাণেরও আছে। একারণেই গাছের ডালে বসে ছাগল পাহারা দিচ্ছে। হঠাৎ করে যাতে আক্রমণ করতে না পারে। বন থেকে একটু দূরেই ওদের বাড়ি। বাঘ-ভালুকের সঙ্গে লড়াই করেই বেঁচে থাকতে হয় ওদের। ভয়কে খুব একটা পাত্তা দেয় না।

বিকেলের নরম বাতাসে নড়ছে গাছের পাতাগুলো। বিষাণের মাথার লম্বা চুলগুলোও এলোমেলো উড়ছে। ফুরফুরে মনে পাতার বাঁশি বাজিয়ে চলছে বিষাণ। এমন সময় বনের ভেতর থেকে হনহন করে মাঠে ঢুকে পড়ল একটা ভালুক। একটুও দেরি না করে একটা ছাগলকে তাড়া করল। ছাগলদের ভ্যাঁ ভ্যাঁ শুনে বিষাণের চোখ গেল সেদিকে। ভয় লাগলেও বসে রইল না ও। গাছের একটা ডাল ভেঙে হাতে নিয়ে দৌড়ে ছুটল ভালুকের দিকে। ভালুকটি ছাগল ধরা বাদ দিয়ে বিষাণকে ধরার জন্য হা করে ছুটে এল। বিষাণ দৌড় দিয়েও বেশিদূর যেতে পারল না। চক্ষের পলকে কামড়ে ধরল ওর একটা হাত। ও বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে লাগল। ছাগলগুলোও ভয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকল আর ভ্যা ভ্যা করতে লাগল।

ঠিক এই মুহূর্তে একটা বুনো মোষ ধেয়ে আসতে লাগল বিষাণ ও ভালুকের দিকে। বিষাণ আরও বেশি ভয় পেয়ে গেল। কামড়ে ধরা হাতটা যখন ভালুকের চোয়াল থেকে ছাড়ানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছে, তখনই আরেক বিপদ। পাগলা মোষটাও যদি আক্রমণ করে বসে, তাহলে আর বাঁচার উপায় নেই। তবে বিষাণ যা ভেবেছিল, হলো তার উলটো। মোষ দৌড়ে এসে ভালুককে খুব জোরে একটা গুঁতো মারল। গুঁতো খেয়ে বিষাণের হাত ছেড়ে দিয়ে দশ-বার হাত দূরে ছিটকে পড়ল ভালুক। তারপর ব্যথায় ক্যাক ক্যাক করতে একদৌড়ে বনের ভেতর পালিয়ে গেল।

বেঁচে গেল বিষাণ। বিষাণের দিকে মায়াময় চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল মোষটা। তারপর বনের দিকে পা বাড়াল। ততক্ষণে বিষাণের বাবা-মা এসে পড়েছেন। কিছু ওষুধি গাছগাছড়া ছেঁচে ওর হাতে লাগিয়ে দিলেন। ঘটনা শুনে ভীষণ অবাক হলেন তারা। কেননা, বুনো মোষগুলো খুব ভয়ঙ্কর হয়। আজ জানা গেল, উপকারী বুনো মোষও আছে।

প্রভাষক, মির্জাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, টাঙ্গাইল

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper