একটি ঘুড়ির গল্প
আলমগীর কবির
🕐 ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জুন ২০, ২০২০
আজ শিমুলের মন ভালো নেই।
ইশকুলে সে লম্বা ছুটি পেয়েছে। লেখাপড়ার চাপ এখন আর আগের মতো নেই।
কিন্তু তবুও সকাল বিকাল নিয়ম করে পড়তে হয় তাকে। মায়ের কড়া শাসন।
মন ভালো না থাকার আরো অনেক কারণ আছে। কী একটা রোগ এসেছে দেশে। যার জন্য ইশকুল ছুটি। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয় না কতদিন। কোথাও ঘুরতে যাবে তারও উপায় নেই। অবসর সময়গুলো একদম ভালো কাটছে না শিমুলের।
ভালো কাটানোর চেষ্টা করে সে। গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে। কিন্তু বই পড়তে পড়তে চোখেও একসময় জ্বালা ধরে। শিমুল জানালার কাছে বসে লেখালেখি করে। জানালা দিয়ে পাখিদের ওড়াওড়ি দেখে। পাখিদের নিয়ে ছড়া লেখে।
সেদিন দুপুরে হঠাৎ করে নামল ঝুম বৃষ্টি। শিমুল দৌড়ে গেল বৃষ্টিতে ভিজবে বলে। দু’মিনিট যেতে না যেতেই মা দেখে ফেললেন তা। জোর করে ধরে নিয়ে এলেন। বৃষ্টিতে ভেজা যাবে না!
দুপুরটাই মাটি হয়ে গেল।
বৃষ্টি থেমে যেতেই শিমুল দৌড়ে ছাদে চলে যায়।
বৃষ্টি পেয়ে প্রকৃতি কত সুন্দর হয়ে ওঠে। শিমুল প্রাণ ভরে তা উপভোগ করতে থাকে।
বৃষ্টি ভেজা আকাশ তাকে ডাকে।
বৃষ্টি ভেজা বাতাস তাকে ডাকে।
আরো ডাকে বন বনানী, নদী-নালা।
শিমুলের আবারও পাখি হতে ইচ্ছে করে। পাখিদের সমাজে মনে হয় এত শাসন বারণ সীমানা নেই!
ছাদ থেকে পাশের বাসার একটি ছেলেকে ঘুড়ি ওড়াতে দেখে সে।
ছাদ থেকে নেমে শিমুল বাবার কাছে যায়। বলেÑ বাবা, আমাকে একটা ঘুড়ি বানিয়ে দাও না?
কথা শুনে মা রেগে যান।
ঘুড়ি ওড়াতে তো বাইরে যেতে হবে। না না এখন বাইরে যাওয়া যাবে না।
বাবা কিন্তু রেগে যাননি। শিমুলের কষ্ট তিনি বুঝতে পারলেন। বাবা শিমুলকে কাছে টেনে নিলেন। মাথায় চুলে হাত বোলালেন।
আচ্ছা বানিয়ে দেব। সেই কতদিন আগে ঘুড়ি বানিয়েছিলাম! এখন কেমন হবে জানি না।
বাবা মাকে বললেন, এখন শিশুদের প্রতি আমাদের যতœশীল হতে হবে। দীর্ঘ ছুটির এই সময়ে যেন তারা মানসিকভাবে কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুদের যা ভালো লাগে, তাদের পাশে থেকে তাদের তা করার সুযোগ করে দিতে হবে।
বাবার কথা শুনে শিমুলের মন ভালো হয়ে যায়। সে ঘুড়ি ওড়াতে পারবে। স্বপ্নের ঘুড়ি তার মনের আকাশে উড়তে থাকে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228