ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ছোটদের বঙ্গবন্ধু

সাধন সরকার
🕐 ৩:১০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০২০

বঙ্গবন্ধু শিশুকাল থেকেই ছিলেন অন্যায় ও সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার। বাংলার নদী-মাটি-কাদাজল মাড়িয়ে বেড়েওঠা এ দেশপ্রেমিক মানুষটি সর্বদা দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে ভেবেছেন। তার আপসহীন ভালোবাসার কারণেই আজকের এ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি তিনি ছিলেন গরিব-দুঃখী মানুষের আপনজন। জাতির পিতা সব ধরনের মানবীয় গুণাবলি ও ভালো কাজের চর্চা ছোটবেলা থেকেই ধীরে ধীরে রপ্ত করেছিলেন। ভাষা আন্দোলন থেকে বাঙালির জেগে ওঠার প্রতিটি আন্দোলনে তিনি সামনের কাতারে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলা-বাঙালি-বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাথা। তারই দেখানো পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, এগিয়ে নিতে হবে শিশুদের।

শিশুদের জন্য কিছু করার আগ্রহ তিনি প্রবলভাবে অনুভব করতেন। যখনই সময় পেতেন শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করতেন। তার বিভিন্ন বই থেকে জানা যায়, তিনি যখন কোনো কাজে গ্রামেগঞ্জে যেতেন কোনো সভা-সমাবেশে যেতেন শিশুদের দেখলেই তাদের সাথে মিশে যেতেন, গল্প করতেন, খোঁজখবর নিতেন। এমনকি গণভবনেও তিনি শিশুদের সময় দিতেন, বিভিন্ন দিবসের বিশেষ দিনগুলো শিশুদের মাঝে কাটাতেন।

শিশুরাও জাতির পিতাকে আপন করে নিত। তার বহু মানবীয় গুণের ঘটনা আমাদের জানা। ছোটবেলায় বর্ষাকালে নিজের বাবার কিনে দেওয়া একমাত্র ছাতাটা তিনি এক বন্ধুকে দিয়ে দিয়েছিলেন। শীতকালে এক বৃদ্ধাকে নিজের চাদর দিয়ে আসার গল্পও সর্বজনবিদিত। মানুষকে তিনি প্রবলভাবে বিশ্বাস করতেন। প্রতিটি শিশু হাসিখুশির মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠুক এটা সবসময় চাইতেন।

জাতির পিতা শৈশব-কৈশোর থেকেই হেসে-খেলে, বাঁধনহারা আনন্দে, মুক্ত বাতাসে, মুক্তমনে বেড়ে উঠেছেন। আমাদের শিশুরা যাতে এ ধরনের পরিবেশ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে আমাদেরই। শিশু-কিশোরদের মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে, তাদের কথা শুনতে হবে। মা-বাবা ও শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের যেন বন্ধুত্বসুলভ আচরণ হয়, এটা ভাবতে হবে। তাহলে তাদের আর বিপথে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তার লেখায় বলেছেন- ‘আমার দাদা-দাদি ছেলের (বঙ্গবন্ধুর) কোনো কাজে কখনো বাধা দিতেন না; বরং উৎসাহ দিতেন। অত্যন্ত মুক্ত পরিবেশে আমার বাবার মনের বিকাশ ঘটেছে। প্রতিটি কাজ যখনই যেটা ন্যায়সঙ্গত মনে হয়েছে, আমার দাদা তা করতে নিষেধ না করে বরং উৎসাহ দিয়েছেন।’ (সূত্র : শেখ হাসিনা রচনাসমগ্র)।

বর্তমান সরকারও শিশু-কিশোরদের সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন কল্যাণমুখী উদ্যোগ ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে। শিশুর অধিকার ও তাদের নিরাপত্তায় প্রতিবছর ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ ও ‘শিশু অধিকার সপ্তাহ’ পালন করা হচ্ছে। জাতীয় শিশু নীতি-২০১১, শিশু আইন-২০১৩ পাসসহ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, পথশিশুদের পুনর্বাসন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শিশুদের পিঠে বইয়ের বোঝা কমেছে। দেশে এখন প্রায় শতভাগ শিশু বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। এ সব শিশুর মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করা, আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করা, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো, খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট করা আমাদেরই দায়িত্ব। প্রতিটি স্কুলে বঙ্গবন্ধু কর্নার গড়ে তোলা হয়েছে। এটা খুব ভালো উদ্যোগ। বঙ্গবন্ধু কর্নার গড়ে তোলার ফলে শিশুরা পড়ালেখার পাশাপাশি সঠিক পথের দীক্ষাও পাবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper