ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আশ্চর্য বিড়াল ভাল্লুক

ফারুক হোসেন সজীব
🕐 ৬:৪২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৪, ২০২০

ছোট্ট বন্ধুরা কেমন আছো সবাই? আশা করছি সবাই ভীষণ ভালো আছো। আজ আমি তোমাদের কাছে নিয়ে এসেছি এক অদ্ভুত আর রহস্যময় প্রাণীকে। ভাবছো কোন রহস্যময় প্রাণী? তাহলে চলো সেই প্রাণীটির সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক! কী বলো? সেই প্রাণীটির নাম বিড়াল ভাল্লুক (Cat-Bear) মানে। শুনে নিশ্চয় অবাক হয়ে গেলে তাই না? ভাবছো এতে আশ্চর্যের কী আছে! ক্যাট বিয়ার তো সবার প্রিয়। কিন্তু কখনও কী ভেবে দেখেছো? বিড়াল ভাল্লুক ঠিক কেমন? আসলে ক্যাট বিয়ার, বিড়াল নাকি ভাল্লুক?

প্রাণীটি কিছুটা বিড়াল এবং ভাল্লুকের মতো দেখতে কি-না তাই অমনটা নাম। কিন্তু এই অদ্ভুত প্রাণীটির আচরণ কিন্তু বিড়ালের মতোও নয় আবার ভাল্লুকের মতোও নয়। এটি একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ঘন বনাঞ্চলের উঁচু নিচু বৃক্ষে এদের বাসস্থান। ক্যাট বিয়ারের ইংরেজি নাম Binturong। আর বৈজ্ঞানিক নাম Arctictis Binturong। বিড়াল ভাল্লুককে এশিয়ানরা অবশ্য-পলয়ান বিয়ার-ক্যাটও বলে থাকেন। তবে এদের যত প্রজাতি ছিল, তার মধ্যে কেবল এই প্রজাতির প্রাণীটিই বর্তমানে বেঁচে রয়েছে।

বিড়াল ভাল্লুকের আবাসস্থল কিছুটা ভিন্ন ধাঁচেরই বলা যায়। যেমন ওরা বর্ষায় প্লাবিত এলাকাগুলোতে থাকতে বেশি পছন্দ করে। ভাবছো বর্ষায় তো শুধু পানি আর পানি। ওরা কোথায় বসবাস করে? ওরা এগাছে ওগাছে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। আর গাছের কাঁচা পাকা ফলমূল আর পাতা খেয়ে থাকে। তবে একটা মজার বিষয় হলো বাংলাদেশ, ভুটান, বার্মা, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম বিভিন্ন দেশে বিড়াল ভাল্লুককে দেখতে পাওয়া যায়।

ওদের সারা শরীরই কালো রঙের লোম দ্বারা ঢাকা। আর লেজের কথা যদি বলি! সেটা আবার বাঁকানো। তবে লেজ এবং মুখ লম্বাটে। ওদের শরীরে আবার সাদা রঙের লোমও আছে। ওরা যখন কোনো গাছের ডালে কিংবা কোনো ফলমূল খায়, তখন ওরা হাতের কাজ লেজ দিয়েই সারে। মানে গাছের ডাল কিংবা ফলমূলগুলো বাঁকানো লেজ দিয়ে জড়িয়ে ধরে। তারপর বেশ আয়েশ করে খায়। অনেক সময় ওরা আবার লেজ দিয়ে বাদুড়ের মতো ঝুলেও থাকে।

ওরা লম্বায় প্রায় ১.৫ মিটারের মতো হয়। তবে মজার আরেকটি বিষয় হলো- ওরা গন্ধ শুঁকে শুঁকে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কারণ ওদের ঘ্রাণশক্তি ভীষণ প্রখর।

সবচেয়ে আজব বিষয় হলো- এই বিড়াল ভাল্লুক কিন্তু নিশাচর জাতীয় প্রাণী। ওরা যেহেতু ফল খেতে ভালোবাসে, তাই রাতের অন্ধকারে যেসব ফল পাকে সেগুলো ওরা অন্য সব প্রাণীদের আগেই খেয়ে সাবাড় করে দেয়। তবে ওরা কিন্তু ভীষণ লাজুক প্রকৃতির। মাটির নিচে থাকতে বেশি পছন্দ করে না। কারণ নিচে তো হাজারও প্রাণীর ভিড়।

তাই ওরা গাছের একেবারে আবডালে থাকতেই ভালোবাসে। গহিন উঁচু উঁচু ডালপালার সঙ্গে ওরা খুব সহজেই নিজেকে মানিয়ে আর মিশিয়ে নিতে পারে। তবে ওরা চাইলে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই মাটিতে চলাফেরা করতে পারে। আর ওরা যখন ঘুমায়, তখন ওদের লেজটা আর মুখটাও পেটের কাছে নিয়ে এসে অদ্ভুত গুটিশুটি মেরে ঘুমায়।

ওরা দিনের বেলায় কদাচিৎ ডাকে। তবে স্ত্রী বিড়াল ভাল্লুকগুলো ৮১ দিনে গর্ভধারণের পর বাচ্চা প্রসব করে। ৯১ দিন পর্যন্তও ওরা গর্ভধারণ করতে পারে। তবে সচরাচর ওরা ২টি করে বাচ্চা প্রসব করে। মাঝে মাঝে আবার ৬টি বাচ্চাও প্রসব করে। বিড়াল ভাল্লুক গড়ে প্রায় ৩০ বছরের মতো বেঁচে থাকে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper