বাবা দিবসের গল্প
সৈয়দ আসাদুজ্জামান সুহান
🕐 ৪:৩০ অপরাহ্ণ, জুন ০৮, ২০১৯
ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরা সবাই মা দিবস পালনের পর বাবা দিবসের জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকো। মা দিবসের মতোই বাবা দিবস উদযাপন নিয়ে তোমাদের মনে থাকে নানান রকমের ভাবনা, উৎসাহ ও উদ্দীপনা। আমাদের বাবা হচ্ছে পরম আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক।
বাবা একটি একটি বট বৃক্ষ, যার ছায়া তলে আমরা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ ও প্রশান্তি লাভ করি। বিশ্বে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন তারিখে বাবা দিবস পালিত হয়। তবে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস পালিত হয়। এটাই আন্তর্জাতিক ভাবে বাবা দিবস হিসেবে স্বীকৃত। সেই হিসাবে এই বছর ১৬ জুন হচ্ছে বাবা দিবস। তোমাদের অনেকেই হয়তো জানো না, কিভাবে এলো এই বাবা দিবস? আজ তোমাদের সেই গল্পটাই বলছি।
গ্রেস গোল্ডেন ক্লেটন হচ্ছেন সেই প্রথম ব্যক্তি, যিনি বাবা দিবসের প্রচলন শুরু করেন। ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর প্রথম বাবা দিবস পালনের জন্য আবেদন করেছিলেন পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টবাসী গ্রেস। ভার্জিনিয়ার মোনোনগাহ্য় ভয়াবহ খনি বিস্ফোরণে প্রাণ হারায় ৩৬০ জন পুরুষ। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন সন্তানের বাবা। ফলে প্রায় এক হাজার শিশু পিতৃহারা হয়ে পড়ে।
এ বিষয়টি গ্রেস গোল্ডেন ক্লেটনকে পীড়া দেয়। তিনি স্থানীয় মেথোডিস্ট গির্জার যাজককে মৃত বাবাদের সম্মানে ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই রবিবার বাবা দিবস হিসেবে উৎসর্গ করার অনুরোধ করেন। ৫ জুলাইকে বাবা দিবস করার দাবি জানানোর কারণ, এটি ছিল গ্রেসের মৃত বাবার জন্মদিন। এরপর ১৯৮৫ সালে রাষ্ট্রপক্ষ একটি ঐতিহাসিক ফলক স্থাপনের মাধ্যমে ফেয়ারমন্টকে বাবা দিবসের জন্মস্থান হিসেবে ঘোষনা দেয়। এরপর থেকে প্রতি বাবা দিবসে গির্জায় বাবা দিবসের মাহাত্ম বর্ণনা করা হতো।
বাবা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে আরও এক নারীর অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। ১৯০৯ সালের আগে ওয়াশিংটনে বাবা দিবস বলে কোনো বিশেষ দিন ছিল না। সে সময় স্থানীয় গির্জায় সোনোরা স্মার্ট নামে ওয়াশিংটনবাসী এক নারী মা দিবস পালনের কথা শোনেন। মা দিবস পালনের রীতি রয়েছে কিন্তু বাবা দিবস পালনের রীতি নেই জেনে তিনি ভীষণ অবাক হন। তাই তিনি স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে বাবা দিবস পালনের আবেদন জানিয়েছেন এবং সে বছর ৫ জুন নিজ বাবার জন্মদিনের দিন বাবা দিবস ধার্য করার অনুমতি চান। তবে হাতে কম সময় থাকায় ওই বছর ১৯ জুন প্রথম এ অঙ্গরাজ্যে বাবা দিবস পালন করা হয়। সোনোরা তার বাবা উইলিয়াম স্মার্টকে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাতেই এ দিনের সূচনা করেন।
পরবর্তীতে, ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন করার একটি বিল তুলে ধরা হয়। ১৯১৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন বিলটি অনুমোদন করেন ও তার সাতবছর পর ১৯২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০তম প্রেসিডেন্ট কেলভিন ক্যুলিজ বাবা দিবসকে জাতীয় দিবসের মর্যাদা দেন।
সবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন রাষ্টীয়ভাবে জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস বলে ঘোষণা দেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্বের সব বাবাদের সম্মানে পালিত হয়ে আসছে বাবা দিবস। বাবা দিবসে বিশ্বের সব বাবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228