অমর একুশে বইমেলা কীভাবে এলো
সাজ্জাদ সাজু
🕐 ১:০১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৯
শুরু হয়ে গেল অমর একুশে বইমেলা। বাবা-মা-ভাইবোন সবাইকে নিয়ে আমরা মেলাতে যাই। বই কিনি, স্মরণ করি ভাষাশহীদদের। কিন্তু কীভাবে এলো আজকের এই বইমেলা তোমরা অনেকেই হয়তো জানো। যারা জানো না তারা জেনে নাও, আর তোমরা যারা জানো, তারাও চোখ বুলিয়ে নিতে পারো।
বাংলাদেশে তখন যুদ্ধের যন্ত্রণা চলমান। অনেক বিশিষ্ট লেখক, শিল্পী ও সাংবাদিককে শরণার্থী হিসেবে কলকাতায় অবস্থান করতে হয়েছিল। দেশের জন্য ভালো কিছু করার অপরাধে তাদের সবার কারাবাসের শাস্তি হয়েছিল।
তারা পালিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। নিয়মিতভাবে তারা একত্র হতেন জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসানের কলকাতাস্থ অস্থায়ী বাসায়। লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীদের এই আড্ডায় উপস্থিত থাকতেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন সাহাও। নিয়মিত উপস্থিত থেকে থেকে দেশের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে তাদের উৎসাহ দিতেন। নির্বাসিত এই লেখকদের বই প্রকাশ করার দায়িত্ব তিনি নিজেই নিলেন। সে সময় চিত্তরঞ্জন সাহার ভূমিকায় এবং অন্যদের সহায়তায় ‘স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ’ নামে কলকাতায় একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই সংস্থাটিই পরবর্তীতে ‘মুক্তধারা প্রকাশনী’-তে পরিণত হয়। স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ থেকে তখন ধীরে ধীরে তাদের বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়। চিত্তরঞ্জন সাহা কলকাতা থেকে সেই লেখকদের বই নিয়ে আসেন বাংলাদেশে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বর্ধমান হাউসের বটতলায় এক টুকরো চটের ওপর শরণার্থী লেখকদের ৩২টি বই নিয়ে বসে যান বিক্রি করতে। চার-পাঁচ বছর পর্যন্ত এই চর্চা একাই চালিয়ে যান তিনি। পরবর্তীতে বই বিক্রি করার এই আইডিয়াতে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যান্য প্রকাশনীরা এখানে বই সাজানোতে যুক্ত হয়। ১৯৭৬ সালে কিছু প্রকাশক এসে একাত্ম হয় এবং আরও দুই বছর পর ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি এর সঙ্গে যুক্ত হয়। তখন ‘বাৎসরিক বইমেলা’ বা ‘ঢাকার বইমেলা’ এ রকম পরিচয় ছিল। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে একুশের চেতনার সঙ্গে বইমেলাকে স্থায়ীভাবে মুড়িয়ে নেওয়া হয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228