ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিশ্ববিখ্যাত রূপকথা

সাজ্জাদ সাজু
🕐 ১:২৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০১৯

রূপকথার গল্প পড়তে এবং শুনতে কার না ভালো লাগে! রূপকথার গল্প শুনে আমরা কত-শত কল্পনার রাজ্যের স্বপ্ন দেখি। আমাদের দেশের রূপকথার মতো পৃথিবীর নানান দেশের নানান রূপকথা রয়েছে। চলো জেনে নেই পৃথিবী বিখ্যাত কিছু রূপকথার গল্প...

সিনডারেলা
সিনডারেলার গল্প কে না জানে। এই গল্পের কাহিনী প্রায় ১ হাজার ৫০০ রকমের। মানে একেক দেশে একেক রকম। এ গল্পটি নিয়ে তৈরি হয়েছে কার্টুন এবং সিনেমা। সিনডারেলা সেই যে পরিশ্রমী মেয়েটা, যার আপন বলতে কেউ ছিল না পৃথিবীতে। সৎ মা আর সৎ বোনরা তাকে দিয়ে সারা দিন শুধু কাজই করাতো। তার মনটা ছিল ফুলের মতোই কোমল। তাই তো তার বন্ধু ছিল পাখি, ইঁদুর আর ঘোড়া। এক দিন তার জীবনে একটি সুযোগ এলো। রাজপুত্রের জন্য সারা রাজ্যজুড়ে খোঁজা হচ্ছে মেয়ে। তাই রাজ্যের সব মেয়ের ডাক পড়ল রাজপ্রাসাদে। কিন্তু সিনডারেলার যে একটি সুন্দর জামাও নেই! অনেক বুদ্ধি করে সে তার পুরনো নাচের ড্রেসটাই সেলাই করে তৈরি করে নিল রাজপ্রাসাদে যাওয়ার জন্য। সৎ মা আর বোনরা নানানভাবে তাকে বাধা দিল। কিন্তু শেষমেশ জাদুর বুড়ির সাহায্যে সব বিপত্তি পেরিয়ে সে পৌঁছালো রাজপ্রাসাদে আর জয় করে নিল রাজপুত্রের মন।

তুষার কন্যা ও সাত বামুন
এক দেশে ছিল অনিন্দ্য সুন্দরী এক রানী। এক দিন এক কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে সে জানালার পাশে বসে সেলাই করছিল। বাইরে অনবরত তুষারপাত হচ্ছিল। হঠাৎ তার হাত কেটে এক ফোঁটা রক্ত গড়িয়ে পড়ল সেই তুষারের ওপর। শ্বেতশুভ্র তুষারের ওপর লাল রক্তের ফোঁটা দেখে রানী ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করল তার যেন এমন একটি মেয়ে হয় যে হবে তুষারের মতো শুভ্র আর তার ঠোঁট হবে রক্তরাঙ্গা লাল। ঈশ্বর রানীর সেই ইচ্ছা পূরণ করলেন। তার নাম রাখা হলো তুষার কন্যা। কিন্তু তুষার কন্যার জন্মের সময় রানী মারা গেলেন। তারপর সৎ মায়ের সংসারে ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল তুষার কন্যা। যতই বড় হচ্ছিল তুষার কন্যা ততই যেন তার রূপ ফুটে উঠতে শুরু করল। সৎ মায়ের ছিল একটি জাদুর আয়না। সেই আয়নার সামনে সে যখনই প্রশ্ন করত কে বেশি সুন্দরী, জাদুর আয়না সবসময় উত্তরে রানীর নাম বলত। কিন্তু তুষার কন্যা বড় হলে জাদুর আয়না উত্তরে বলত তুষার কন্যার নাম। জাদুর আয়নার এই উত্তরে সৎ মা প্রচ- খেপে গিয়ে এক বিশ্বস্ত চরকে দায়িত্ব দিল তুষার কন্যাকে হত্যার জন্য। রানীর চর তুষার কন্যাকে হত্যা করার জন্য নিয়ে গেল গভীর জঙ্গলে। কিন্তু তুষার কন্যাকে দেখে তার মায়া হলো। তাই সে তাকে মারতে পারল না। বরং একটি খরগোশ মেরে তার রক্ত নিয়ে রানীকে দেখাল। এদিকে গভীর জঙ্গলে তুষার কন্যা একা একা ঘুরে বেড়াতে লাগল। একসময় সে একটি বাড়ি খুঁজে পেল জঙ্গলে। বাড়িটি ছিল সাতজন বামুনের। তুষার কন্যাকে আশ্রয় দিল তাদের বাড়িতে। এভাবেই দিন কাটছিল। কিন্তু এক দিন রানী জেনে গেলেন তুষার কন্যার কথা। সে তুষার কন্যাকে জঙ্গলে খুঁজতে এলো ছদ্মবেশে। তুষার কন্যাকে একটি বিষ মেশানো আপেল খেতে দিল সে। সেই আপেল খেয়ে তুষার কন্যা ঢলে পড়ল মৃত্যুর কোলে। সাত বামুন কাজ শেষে ঘরে ফিরে অচেতন তুষার কন্যাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ল। এমন সময় সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল এক রাজকুমার। সে ঘোড়া থামিয়ে এগিয়ে এলো। কফিনের মাঝে অপূর্ব সুন্দরী তুষার কন্যাকে দেখেই সে তার প্রেমে পড়ে গেল। তারপর রাজকুমারের ছোঁয়ায় মৃত্যু থেকে ফিরে এলো তুষার কন্যা।

রুপাঞ্জেল
রূপকথার সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র রুপাঞ্জেল চরিত্রটি। যার ছিল অনেক লম্বা চুল। এক পরিবার থেকে শিশুকন্যাকে চুরি করে নিয়ে আসে গোথেল নামে ডাইনি। গোথেল মেয়েটির নাম দিল রুপাঞ্জেল। ধীরে ধীরে রুপাঞ্জেল হয়ে উঠল খুব সুন্দরী আর তার ছিল অনেক লম্বা সোনালি চুল। তখন গোথেল তাকে গভীর জঙ্গলে কাঠের তৈরি অনেক উঁচু একটি ঘরে বন্দি করে রেখে দিল। সেই ঘরটির কোনো দরজা ছিল না। শুধু ছিল একটি জানালা। গোথেল মাঝেমাঝে রুপাঞ্জেলকে দেখতে আসতো। তখন রুপাঞ্জেল তার লম্বা সোনালি চুল জানালা দিয়ে মেলে দিত। সেই চুল বেয়েই ওপরে উঠত গোথেল। এক দিন এক রাজকুমার সেই জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে একটি মিষ্টি মেয়েলি কণ্ঠে গান শুনতে পেল। সে তার চারপাশে খুঁজতে লাগল মেয়েটিকে। তারপর সে কাঠের টাওয়ারটি দেখতে পেল, যার জানালা দিয়ে গানটি ভেসে আসছিল। কিন্তু সেই জানালার কাছে পৌঁছানোর উপায় জানা ছিল না রাজপুত্রের। অবশেষে সে এক দিন উপায় পেল গোথেলের চুল বেয়ে ওপরে ওঠা দেখে। গোথেল চলে গেলে সেও একইভাবে ওপরে উঠে গেল এবং রুপাঞ্জেলকে দেখতে পেল। তারপর তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। রুপাঞ্জেল তার সব দুঃখের কথা রাজকুমারকে বললে, রাজকুমার তার বীরত্ব দিয়ে ডাইনির হাত থেকে রুপাঞ্জেলকে উদ্ধার করে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper