চুলের মানচিত্র
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ২:৫৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
গোপন বার্তা বা গুপ্ত খবর, যুগ যুগ ধরেই তার ধরন ও বৈশিষ্ট্য বদলেছে। গোপনীয়তার মোড়কে ঢেকে পাঠানোর কৌশল সেই প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। কয়েক হাজার বছর আগের কথা। তখন কোডিং শব্দটার সঙ্গে পরিচিতি ছিল না মানুষ। প্রযুক্তি তখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তখন কীভাবে গোপন খবর বা সংকেত পাঠানো হত এই নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সবার মনেই।
অতীতে গোপন কথা চালাচালির নিজস্ব কায়দা ছিল। ছোট ছোট গোষ্ঠীর মানুষরা একে অপরের কাছে গোপন খবর পৌঁছে দিত খুব সাবধানে। হয় কাঠের ওপরে খোদাই করে লিখে তার ওপরে মোম ঢেলে চাপা দিয়ে গোপন চিঠি তৈরি হতো। আর না হলে পশু বা পাখিদের সাহায্য নেওয়া হতো গুপ্ত খবর পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
প্রাচীন পৃথিবীর সংকেতলিপি এখনকার স্টেগনোগ্রাফি। এই শব্দটাও এসেছে গ্রিস থেকে। স্টেগোস মানে হলো আচ্ছাদন আর গ্রেফিয়া অর্থে লিখন। গোপন খবরের অস্তিত্বটাই এমনভাবে চাপা দেয়া হত যে মর্মোদ্ধার করা সবার সাধ্য ছিল না।
কথা চালাচালির জন্য মানব শরীরকেই এক অভিনব উপায় ব্যবহার করা হতো। ধরুন, দুই রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধেছে। এক রাজা হারছেন তো অন্যজন জিতছেন। যিনি হেরেছেন তিনি এবার মিত্র রাজাদের কাছে সাহায্যের জন্য প্রস্তাব পাঠাবেন। তবে রাজ্যের চারদিকে শত্রুসেনার পাহারা। তাহলে খবর পৌঁছানো যাবে কীভাবে? এমন পরিস্থিতিতে অভিনব কৌশল প্রয়োগ করতেন গ্রিক রাজারা।
শত্রুদের চোখ বাঁচিয়ে গুপ্ত খবর পাঠানো জন্য দূতদের মাথা ন্যাড়া করে দিতেন। ন্যাড়া মাথায় উল্কির মতো করে সংকেতলিপিতে বার্তা লিখে রাখতেন। এরপর অপেক্ষা করা হতো কতদিনে দূতের মাথায় চুল গজাবে। ন্যাড়া মাথা কচি কচি চুলে ভরে গেলে আর সংকেতলিপি বাইরে থেকে বোঝা যাবে না।
সেগুলো ছিল পালানোর পথের ম্যাপ। কখনো সংকেতবার্তাও দেওয়া হতো। সাহায্যের জন্য বার্তা পাঠানো হতো। এভাবেই একদিন পর্তুগিজদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি নিজের জন্য একটা গ্রাম তৈরি করেছিলেন। এখানে বৈষম্য আর দাসত্বের শৃঙ্খল ছিল না। গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজের সেনাদলও তৈরি করেছিলেন।
গোপন বার্তা পাঠানোর এমন নানা পদ্ধতি যুগে যুগেই প্রচলিত ছিল। আধুনিক সময় কোড বা ক্রিপ্টোগ্রাফির ব্যবহার বেড়েছে। তাই বার্তা শত্রুর হাতে পড়লেও ভয় নেই, কারণ কোডিংয়ের জ্ঞান ছাড়া তার পাঠোদ্ধার করা সম্ভব নয়।