মৃতদেহের উপর ‘প্যারিস’
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ২:৫২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
প্যারিস নামটা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে সুউচ্চ আইফেল টাওয়ার। মনোমুগ্ধকর লুভঁর মিউজিয়াম, নটর’ডেম ক্যাথিড্রাল, ঝকঝকে রাস্তা-ঘাট, সুন্দরী বিদেশিনী, রাস্তায় রাস্তায় গান-নাচ ইত্যাদি নানা ছোট ছোট দৃশ্যের সমারোহ।
তবে যদি বলি এই মনোরম প্যারিস শহরের নিচেই বছরের পর বছর ধরে শায়িত আছে প্রায় ৬০ লাখ মানুষের মৃতদেহ! চমকে উঠবেন? নাকি অবাক হবেন? আজ্ঞে হ্যাঁ! প্রায় কয়েকশো কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা সুড়ঙ্গের নিচে এক সময় প্রায় ৬০ লাখ মানুষকে কবর দিতে বাধ্য হয়েছিল সে দেশের সরকার। তবে কেন? আজ শুনব সেই শিহরণ জাগানো ঐতিহাসিক গল্প।
তখন ১৩০০ সাল। ফ্রান্সের বুকে অবস্থিত প্যারিসকে তখন গ্রামাঞ্চল থেকে শহরাঞ্চলে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা চলছে জোরকদমে। তবে গোটা গ্রামকে শহরে পরিণত করার জন্য যে পরিমাণ পাথরের প্রয়োজন, তা তখন প্যারিসে মজুদ ছিল না। তাই শুরু হলো সুড়ঙ্গ খোঁড়া।
মাটির অনেক গভীর অবধি সুড়ঙ্গ খুঁড়ে যা পাথর পাওয়া যেত। সেটা দিয়েই তৈরি করা শুরু হলো ঘর-বাড়ি, সেতু ও বিভিন্ন স্থাপত্য। এভাবেই কিলোমিটারের পর কিলোমিটার একের পর এক সুড়ঙ্গ খুঁড়ে, তা থেকে প্রয়োজনীয় পাথর বের করে চলতে থাকে পৃথিবীর অন্যতম মনোমুগ্ধকর শহর প্যারিসের নির্মাণকার্য।
এতটা এলাকাজুড়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার ফলে যাতে শহরের ভিত দুর্বল না হয়ে পড়ে, সেজন্য আগে সেগুলোকে মেরামত করে, তার মধ্যে একটার পর একটা মৃতদেহ সাজিয়ে প্রায় ৬০ লাখ মানুষের মৃতদেহ কবর দেওয়া হলো তার ভিতরে।
এই সুড়ঙ্গই আজ প্যারিস শহরের অন্যতম জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট ‘প্যারিস ক্যাটাকম্ব’ নামে পরিচিত। পর্যটকদের এর ভেতরের কিছুটা অংশ অবধি যাওয়ার অনুমতি আছে।