৫০ দিন কোমায় থেকে সন্তানের জন্ম
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ৩:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
একটি স্কুলের সহ-শিক্ষিকা লরা ওয়ার্ড। অন্তঃসত্ত্বা এই নারীর বয়স ৩৩। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোমায় ছিলেন। ৫০ দিন পর কোমা থেকে ফিরে দেখা হলো তার নবজাতকের সঙ্গে। জন্মের প্রথম মাস মাকে ছাড়াই কাটিয়েছে লরা ওয়ার্ডের মেয়ে। লরাও শুনতে পাননি সন্তানের প্রথম কান্না, অনুভব করেননি প্রথম স্পর্শ। মেয়ের প্রথম অনেক কিছুই না-দেখা রয়ে গেল তার। অক্টোবরের মাঝামাঝি সন্তানের জন্ম দেওয়ার কথা ছিল এই স্কুল শিক্ষিকার।
তবে তার প্রসব করানো হয় নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগে, জুলাইয়ের শেষ দিকে। লরা তখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোমায়। আগেই তিনি শুনেছেন, সময়ের অনেক আগে প্রসব না করালে মা-সন্তান কেউই বাঁচবেন না। জ্ঞান হারানোর আগে লরা মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়েছিলেন অস্ত্রোপচারের। এরপর তার ঘুম ভাঙে ৩০ সেপ্টেম্বর। জ্ঞান ফেরার পর শুরু হয় নতুন যন্ত্রণা।
শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ অক্ষম হয়ে পড়েছিলেন লরা। হাতের একটা আঙুলও নাড়াতে পারছিলেন না। লরা বলেছেন, মেয়েকে চোখের সামনে দেখে তাকে নিজের হাতে না ধরার কষ্ট তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। পুরো পরিস্থিতিটাই ছিল ভয়ানক হতাশার। তারপরও ক্রমাগত লরাকে সাহস জুগিয়ে গিয়েছেন স্বামী এবং বড় ছেলে উইলিয়াম।
লরা জানিয়েছেন, বেঁচে থাকতে গেলে প্রাথমিক যে কাজগুলো করা দরকার, তার কোনোটিই করতে পারছিলেন না তিনি। শিশুর মতোই খাবার খাওয়া, ব্রাশ করা, এমনকি হাঁটাও শিখতে হয়েছে তাকে। জুনের শেষের দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন লরা। তারপর থেকে পাঁচটি হাসপাতালে বিভিন্ন পর্যায়ে চিকিৎসা হয়েছে তার। এখনও তিনি বাড়ি ফিরতে পারেননি।
এদিকে লরার স্বামী লি শপথ করেছিলেন যে স্ত্রী সুস্থ হয়ে বাড়ি না ফিরলে সদ্যোজাত কন্যার নামকরণও করবেন না। সেই প্রতিজ্ঞা অবশ্য লরার অনুরোধেই ভাঙতে হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী কন্যার নাম রেখেছেন হোপ। নামের বিষয়ে একটু বেশিই অনুভূতিপ্রবণ ছিলেন লরা। হোপ মানে আশা। যা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।