ভাত না খেয়ে ৪৬ বছর
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২১
একজন সাধক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম ফজলুল হক। শরীর পাতলা ও লিকলিকে গড়নের। মুখভর্তি সাদা দাড়ি ও গোঁফ। মাথায় লম্বা চুল। চাদর দিয়ে শরীর সবসময় ঢেকে রাখেন। বয়স ৮০ ছুঁইছুঁই। সাধনার কারণে গত ৪৬ বছর তিনি ভাত খান না। ঘুরে বেড়ান দেশের বিভিন্ন স্থানে। সাধকের বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের ভীমপুর গ্রামে।
ছোটবেলা থেকেই তার চালচলন ছিল ভিন্নরকম। ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন জায়গায়। পড়াশোনা ঠিকমতো করতেন না। ক্লাস টপকে নবম শ্রেণিতে, এরপর দশম শ্রেণিতে পড়েন। দেশে শুরু হয় যুদ্ধ। তখন বয়স প্রায় ২৫ বছর। যুদ্ধের সময় ৭ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিলেন। যুদ্ধ করলেন দেশের জন্য। এরপর ১৯৭২ সালে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৭৪ সালে বিয়ে করেন চুয়াডাঙ্গায়। সাধনার কাজে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়ানোর সময় ওই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিয়ে। দাম্পত্য জীবনে পাঁচ ছেলেমেয়ে। বয়স যখন ৩৪ বছর তখন গুরুজির নির্দেশে ভাত খাওয়া ছেড়ে দেন। এরপর থেকে ৪৬ বছর তিনি ভাত খান না। ধান, গম, যব ও ভুট্টা থেকে উৎপাদিত কোনো কিছুই খান না। কারণ এতে গুরুর নিষেধ রয়েছে। এরপর আর কখনো খাওয়ার চেষ্টাও করেননি। ভাত খেতে গেলে নাকি তার নাকে পচা একটা গন্ধ লাগে। যা সহ্য করতে পারেন না। এখন পর্যন্ত সুস্থ ও সবল রয়েছেন। ভাতের পরিবর্তে শাক, সবজি ও ফল খেয়ে থাকেন।
সাধক ও মুক্তিযোদ্ধা একেএম ফজলুল হক বলেন, আমার বয়স যখন ১০ বছর তখন থেকেই সাধনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। আমাকে সাধনার কাজে উৎসাহ জুগিয়েছেন গুরু শাহ মছির উদ্দিন চিশতি। সাধনাক্ষেত্র ভারতের আজমির শরিফ খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি তরিকা। সেখানে চার বছর ছিলাম। সাধনার ফলে অনেক দূর এগিয়েছি। আল্লাহ আমাকে অনেক কাছে টেনে নিয়েছেন। আমার তিনটা ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। আমার ভবিষ্যতে আর কোনো ইচ্ছা নেই। বিভিন্ন মাজারে ঘুরে বেড়াই মানুষকে সুন্দর ও সত্য বলার জন্য। তিনি বলেন, সাধনা নিয়ে সব সময় থাকি। কেউ যদি কখনো আমাকে স্মরণ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার সঙ্গে আমার দেখা হবে ইনশাল্লাহ।