ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ফের অন্তঃসত্ত্বা

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০২১

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ফের অন্তঃসত্ত্বা

রেবেকা রবার্টস (৩৯) ও তার সঙ্গী রিস ওয়েভার (৪৩) এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ্যত্বের জটিলতা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছিলেন। অবশেষে তাদের মুখে হাসি ফোটে। একপর্যায়ে ঘরে বসে পরীক্ষায় দেখা যায় রেবেকা অন্তঃসত্ত্বা। দীর্ঘ চেষ্টার পর ইতিবাচক ফল পেয়ে এই জুটি দারুণ খুশি হয়।

পরে রেবেকা আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে যান। আল্ট্রাসনোগ্রামের স্ক্রিনে অনাগত সন্তানের অস্তিত্ব দেখতে পায় এই জুটি। এমনকি তার হৃৎস্পন্দন শুনতে পান তারা। রেবেকার আল্ট্রাসনোগ্রামের প্রতিবেদনে তার প্রসূতিবিদ একজন সন্তানের কথা লিখে দেন। ৫ সপ্তাহ পর ১২তম সপ্তাহে আবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে যান রেবেকা। তখন ঘটে এক বিস্ময়কর ঘটনা। যিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম করছিলেন, তিনি স্ক্রিনে দেখতে পান, রেবেকার গর্ভে দুটি সন্তান। গর্ভে থাকা একটি সন্তানের চেয়ে অপরটির বিকাশ তুলনামূলকভাবে কম। রেবেকা জানতে পারেন, তার গর্ভে থাকা দুই সন্তান সাধারণ যমজ নয়।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, রেবেকার এমন গর্ভধারণের বিষয়টি একটি বিরল ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। রেবেকা একবার গর্ভধারণের পর সে অবস্থাতেই আবার গর্ভধারণ করেন। রেবেকার প্রসূতিবিদ ডেভিড ওয়াকার বলেন, তার (রেবেকার) ক্ষেত্রে যে বিষয়টি ঘটেছে, তা খুবই বিরল। তিনি ২৫ বছর ধরে এই পেশায় আছেন। এমন অভিজ্ঞতা তার আগে কখনো হয়নি। এটা খুবই বিরল ঘটনা। ডেভিড ওয়াকার বলেন, এমনটা সাধারণত হয় না। তাই কয়েকবার স্ক্যান করার পর তিনি নিশ্চিত হন যে রেবেকার গর্ভে দুটি সন্তান আছে।

রেবেকার গর্ভে দুটি সন্তান শনাক্ত হওয়ার পর প্রসূতিবিদরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। কারণ, তার গর্ভের দ্বিতীয় সন্তানের আকার খুবই ছোট ছিল। প্রসূতিবিদ ডেভিড ওয়াকার বলেন, নানা পরীক্ষার পর তারা দেখতে পান, গর্ভের দ্বিতীয় সন্তানটির বৃদ্ধির হার তিন সপ্তাহ কম। এ থেকে তারা বুঝতে পারেন, রেবেকা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আবার অন্তঃসত্ত্বা হন। রেবেকার ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছে, বিশ্বে তেমন ঘটনার প্রকৃত সংখ্যা অজানা। তবে ২০০৮ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অব অবস্টেটরিক অ্যান্ড গাইনিকলজি অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ বায়োলজিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই ধরনের ১০টির কম ঘটনার উল্লেখ ছিল।

সাধারণত গর্ভাবস্থায় হরমোন ও শারীরিক পরিবর্তনের ফলে আরেকটি গর্ভধারণের সুযোগ থাকে না। তবে রেবেকার ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি। রেবেকার ক্ষেত্রে নানা জটিলতা ছিল। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছিলেন, তার গর্ভের দ্বিতীয় সন্তানটি নাও বাঁচতে পারে। তার অনাগত সন্তানদের সম্ভাব্য জন্মদানের তারিখ এক ছিল না। কিন্তু জটিলতার কারণে চিকিৎসকরা একই সময় সিজার করে দুই সন্তানের জন্মদানের সিদ্ধান্ত নেন। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সিজারের মাধ্যমে একই সঙ্গে দুই সন্তানের জন্ম দেন রেবেকা। প্রথম আসে ছেলেশিশু নোয়াহ। তার দুই মিনিট পর আসে মেয়েশিশু রোজালি। ছেলে শিশুটির ওজন ছিল ৪ পাউন্ড ১০ আউন্স। মেয়ে শিশুর ওজন ছিল ২ পাউন্ড ৭ আউন্স।

জন্মের পর ছেলে শিশুটিকে তিন সপ্তাহের বেশি হাসপাতালে থাকতে হয়। মেয়ে শিশুটিকে থাকতে হয় ৯৫ দিন। দুটি শিশুর বয়স এখন প্রায় ছয় মাস। তারা বেড়ে উঠছে বলে জানান রেবেকা। তিনি বলেন, যদিও তারা একই দিন জন্ম নিয়েছে, তবে তাদের মধ্যে অবশ্যই বয়সের একটা ব্যবধান আছে। তাদের দেখেই তা বোঝা যায়। তিনি আরও বলেন, ‘অলৌকিক ঘটনা ঘটতে পারে। আর আমার সন্তানরা তার প্রমাণ।’

 
Electronic Paper