বিপজ্জনক যত ভাইরাস
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ০৮, ২০২১
গেল বছর ২০২০ সালে বিশ্ব এক নতুন অভিজ্ঞতা পেয়েছে। ঘরবন্দি থেকেছে কোটি কোটি মানুষ। এক ভাইরাস চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের প্রতিটি কোণায়। সংক্রমণ রোধে মানুষ বেছে নিয়েছে বন্দি জীবন।
পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অনেক মহামারী হয়েছে যা কেড়ে নিয়েছে হাজারো মানুষের প্রাণ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক কিছু ভাইরাস সম্পর্কে-
ইবোলা : ১৯৭৬ সালে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়। ভয়ংকর এই ইবোলাভাইরাসে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশের মতো। ২০১৪ ও ২০১৬ সালের মধ্য আফ্রিকায় বড় প্রাদুর্ভাবে অন্তত ১১ হাজার মানুষ মারা গেছে। ইবোলা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যুই অবধারিত। এই অসুখের ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার হয়নি এখন পর্যন্ত।
ডিজিজ এক্স : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীব্যাপী মহামারী ঘটাতে পারে এমন অসুখের তালিকায় নতুন রহস্যময় অসুখ ‘ডিজিজ এক্স’-এর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। ডিজিজ এক্স শুনে অপরিচিত মনে হতে পারে। এটি কোনো রোগের নামও নয়। তালিকায় থাকা এই নামের ব্যাপারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ডিজিজ এক্স হলো এমন কোনো রোগ যা মানবজাতির কাছে এখনো অজানা, কিন্তু তা আন্তর্জাতিকভাবে মহামারির রূপ নিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, একটা অজানা রোগে পৃথিবীজুড়ে ব্যাপক মহামারি দেখা দিতে পারে বলে আমরা অনুমান করছি এটা বুঝাতেই ‘ডিজিজ এক্স’ সম্ভাব্য মহামারির তালিকায় যোগ করা হয়েছে।
লাসা : লাসা জ্বর সংক্রমিত চর্বি, ইঁদুরের প্রস্রাব দ্বারা দূষিত খাদ্য এবং ইঁদুরের স্পর্শ করা খাবার থেকে ছড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে জ্বরের সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং চোখে ও নাকে সংক্রমণ হতে পারে। লাসা জ্বরটি পশ্চিম আফ্রিকা বিশেষ করে নাইজেরিয়াতেই বেশি দেখা যায়। দেশটির লাসা শহরে এ রোগটি প্রথম দেখা দিয়েছিল ১৯৬৯ সালে।
জিকা ভাইরাস : মশার মাধ্যমে দ্রুত এ ভাইরাসটি ছড়ায়। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটেছে এমন কোনো রোগীকে এডিস মশা কামড়ানোর মধ্য দিয়ে এর স্থানান্তর হয়। পরে ওই মশাটি অন্য ব্যক্তিদের কামড় দিলে তা ছড়াতে থাকে। এরপর ওই ব্যক্তিদের মাধ্যমেই ভাইরাসটির বিস্তার ঘটতে থাকে। তবে যৌন সংসর্গের মাধ্যমেও রোগটি ছড়াতে পারে। উগান্ডার জিকা ফরেস্ট এলাকায় বানরের মধ্যে ১৯৪৭ সালে এটি আবিষ্কৃত হয়।
সার্স ভাইরাস : সার্স অর্থাৎ সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি ভাইরাসের উৎপত্তি চীনে। বিজ্ঞানীরা বলছেন খাটাশ জাতীয় বিড়াল থেকে ভাইরাসটি এসেছে। তবে এটিও বাদুরের সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে দু’বার এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। আট হাজারের বেশি আক্রান্তের মধ্যে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে ভয়াবহ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তবে ২০০৪ সালের পর থেকে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
করোনা : চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ঘিরে ক্রমেই ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। ইতিমধ্যে ভারইরাসটি প্রায় সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসের থাবায় লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ভাইরাসটিকে পরীক্ষা করে মনে করা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের উৎস হতে পারে বাদুড় ও সাপ।