প্রতিবন্ধকতা কাটাত এভারেস্ট জয়!
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১২:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৩, ২০২১
পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করার নেশা বিশ্বের অনেক মানুষের। ১৯৪৮ সালে প্রথম এই জয় করতে যাত্রা শুরু করেন একদল মানুষ। তবে সেই চেষ্টা সফল হয় ১৯৫৩ সালের ২৯ মে সকালে। এডমুন্ড হিলারি প্রথম এভারেস্টের শীর্ষে পা রাখেন। তবে পর্বত জয় করতে নয়, নিজেদের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে বেরিয়েছিল তারা। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের মাথায় তখনও পা পড়েনি মানুষের। শুধু জল্পনা-কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। সেই আশ্চর্য উন্নাসিক পাহাড় জয় করার স্বপ্ন নিয়েই সুদূর নিউজিল্যান্ড থেকে ছুটে গেছিলেন এই মানুষটি।
যতদিন মানুষের বিস্ময় থাকবে, নতুনকে চেনার নেশা থাকবে মনে, ততদিন অভিযাত্রীদের বিশ্বকোষে এই দীর্ঘকায় অসমসাহসী মানুষটির নাম লেখা থাকবে সোনার অক্ষরে। শুধু এভারেস্টই নয়, তিনিই প্রথম অভিযাত্রী। যিনি তিন- তিনটি মেরু- উত্তর মেরু, দক্ষিণ এবং এভারেস্ট যাকে বলা হয় থার্ড পোল বা তৃতীয় মেরু। সবগুলোই জয় করেছিলেন। একশো বছর আগে ১৯১৯ সালের ২০ জুলাইয়ে জন্ম হিলারির। নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড শহরে পার্সিভাল অগস্টাস হিলারি ও গারট্রুড ক্লার্কের ঘর আলো করে এল নবজাতক, নাম দেয়া হল এডমন্ড।
এডমন্ডকে প্রথমে ভর্তি করা হল টুয়াকাউ নার্সারি স্কুলে। গতানুগতিক পড়াশোনা চলছিল, তার মধ্যেই হঠাৎ করে এক অভাবনীয় সুযোগ এল এডমন্ডের জীবনে। ১৬ বছর বয়সে স্কুল থেকেই ছাত্রদের নিয়ে যাওয়া হল মাউন্ট রুয়াপেহু পর্বতে ভ্রমণে। স্কুলের এই শিক্ষামূলক ভ্রমণে এসে তার সামনে যেন নতুন এক পৃথিবীর দরজা খুলে গেল। অনেক উচ্চতায় তুষার শুভ্র প্রকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে এই প্রথম তার মনে নতুন কিছুর ভাবনা জাগলো।
১৯৫৩-তে জন হান্টের নেতৃত্বে ব্রিটিশ অভিযাত্রী দল এভারেস্ট অভিযানের পরিকল্পনা নিলে এডমন্ড হিলারি তার বন্ধু জর্জ লোয়িকে নিয়ে সেই দলে নাম লেখালেন। দশ হাজার পাউন্ড মালপত্র, ৩৬২ জন কুলি আর ২০ জন শেরপাসহ চার শতাধিক অভিযাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয় সেই ঐতিহাসিক এক্সপিডিশন। মার্চ মাসে বেস ক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করে ধীরে ধীরে দলটি ৭,৮৯০ মিটার উঁচুতে উঠে সাউথ কলে ক্যাম্প ফেলে।
এই সাউথ কল বা দক্ষিণের পথটি তার আগের বছরই আবিষ্কার করেছিলেন সুইস অভিযাত্রীরা। বেসক্যাম্পে ঢোকার মুখে প্রকৃতির সেই ভয়াল সুন্দর রূপের সামনে সম্মোহিতের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন এডমন্ড। পাহাড়ে তিনি আগেও চড়েছেন, কিন্তু মাউন্ট এভারেস্টের সৌন্দর্যের সঙ্গে কোনোকিছুরই যেন তুলনা চলে না। সারাজীবন দেওয়া অজস্র সাক্ষাৎকারে সে কথা বারবার বলে গেছেন এডমন্ড।