নদীর নামে গ্রাম
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
স্বপ্নের নদীর চেয়ে বলশালী তিনটি ভিন্ন ভিন্ন রূপপ্রকৃতির নদীর কোলে আমার ইছামতী গ্রামখানি রেখে এসেছি ভাঙনপ্রবণ ইছামতী নদীতে, আমার গ্রামে। সেই হারানো প্রথম যৌবনে। কর্ণফুলী, ইছামতী ও সুন্দরী খাল তিন দিকে ঘিরে রেখেছে মেখলার মতো। সেই গ্রামের বাড়ি এখন শুয়ে-বসে আছে একাকী। তালাবদ্ধ। আমার দুই বড় ভাই, পুত্র-কন্যা-কলত্র নিয়ে ব্রিটেন-আমেরিকা প্রবাসী।
বাড়ির উত্তর পাশের পাকা রাস্তার উত্তর পাশ ঘেঁষে আমাদের বড় পুকুর। প্রথম বর্ষায় সেখান থেকে মাছ উজিয়ে বিলে-পুকুরে আশ্রয় খোঁজে। ডিম দেওয়ার সময় এসে যাচ্ছে ওদের। মাগুর, কৈ, শোল, পুঁটি সবার শরীর জানান দিয়েছে। ছেলেবেলায় গ্রামে থাকতে আদি ভিটের পুকুরে ওদের কাণ্ডকীর্তন দেখতাম। পুকুরের উজানো মাছ ধরার অধিকার ছিল না বাবার কড়া শাসনে। তখন জ্যান্ত মাছ ধরার বা খাওয়ার রেওয়াজ ছিল না- কারণ প্রাণী হত্যা নিষেধ।
মাছের সেই উজান বাওয়ার খেলা দূর থেকে দেখতাম। কাছে যাওয়া বিপদজনক বিষধর সাপের জন্য। ওসব বিষধর সাপের আবাস ছিল ওই পুকুরপাড়ের নির্জনতা ঘিরে। এখন নতুন বাড়ির দক্ষিণ দিকের ছোট পুকুরে মাছ উজান বেয়ে ছোটে কি-না জানি না, সেদিকে তেমন করে কোনো সময় খুঁজে দেখিনি।
রাস্তার উত্তর পাশের বড় পুকুর থেকে মাছ উজানো বিখ্যাত। পাড়ার তেজস্বী যুবকেরা এখন ওর খবর রাখে, মাছ ধরে নিয়ে যায় ঘরে। ওই সময় কখনও নতুন বাড়িতে থাকার অবসর হয়নি। সেই রোমাঞ্চ থেকেও অন্য অনেক কিছুর মতো নিজেকে বঞ্চিত ফেলে রেখেছি। ঝম ঝম বৃষ্টির রাতে বা দিনে মাছেরা উজানে যায় ডিম দিতে।