ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঘ্রাণ শুঁকেই শত্রুর শক্তি বুঝতে পারে লেমুর

খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০১৮

মানুষ সাধারণত চোখের বিচারে কেউ শারীরিকভাবে বলবান নাকি দুর্বল সেটা বিচার করে। হৃষ্টপুষ্ট শরীর দেখলে তাকে ‘শক্তিশালী’ ভেবে সমীহ করে। তার ভেতরের শক্তি আসলে কতটুকু সেটা যাচাই করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু পৃথিবীতে একটি মাত্র প্রাণী আছে যারা শারীরিক ক্ষমতার ‘ঘ্রাণ’ নিতে পারে!

সেই প্রাণীটি হচ্ছে লেমুর। মাদাগাসকারের এই প্রাণীটি গবেষকদের নিকট এক বিরাট বিস্ময়। প্রতিপক্ষকে দেখে আন্দাজে পালানোর দরকার পড়ে না এদের। কারণ, শত্রু একটু কাছে এলেই ঘ্রাণ শুঁকে এরা বুঝে ফেলে দু’জনের মধ্যে কার শক্তি বেশি। মারামারি লাগলে কে জয়ী হবে।
কিভাবে এটা সম্ভব। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, লেমুরদের পুরুষ এবং নারী উভয় প্রজাতির জননাঙ্গে এক ধরনের গ্রন্থি থাকে। এই গ্রন্থি থেকে এক ধরনের ঘ্রাণ ছড়ায়, যা তাদের ক্ষমতা বুঝতে সাহায্য করে। এছাড়া পুরুষদের হাত ও পায়ের গিট এবং কাঁধে একই গ্রন্থি থাকে। সাধারণত মারামারি করতে গেলে এসব প্রত্যঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ।
এসব প্রত্যঙ্গের গ্রন্থিগুলো থেকে যে ঘ্রাণ বের হয় তা সংশ্লিষ্ট লেমুরের শক্তির মাত্রা নির্দেশ করে। ফলে ঘ্রাণ নাকে যেতেই একটি লেমুর ধরে ফেলে প্রতিপক্ষের হাত, পা কিংবা ঘাড়ে কতটুকু শক্তি আছে। আরো মজার ব্যাপার হলো, প্রত্যেক লেমুর নিজের শক্তির মাত্রাও তাৎক্ষনিকভাবে মাপতে পারে। তাই লড়াই শুরু হলে কে জিতবে সেটাও সাথে সাথে হিসেব কষে ফেলতে পারে। নিজের শক্তি কম হলে তবেই পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার ডিউক ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, লেমুরদের আরো অনেক মজার মজার বৈশিষ্ট্য আছে। কোনো লেমুরের শরীরের কোথাও যদি কেটে যায় তবে তার সামনে সারাক্ষণ বিপদ অপেক্ষা করে। কারণ সেই কাটা স্থান যদি শরীরের লোমে ঢাকাও থাকে তবুও অন্য লেমুররা সেটা বুঝতে পারে। ফলে দুর্বল শরীর পেয়ে তার উপর হামলা চালায়। একারণে আহত লেমুররা পুরোপুরি সুস্থ হওয়া পর্যন্ত লুকিয়ে থাকে।
যখন তখন প্রতিপক্ষের দ্বারা হামলার শিকার হবার কারণে লেমুররা দল বেধে ঘুরে বেড়ায়। প্রতি দলের একজন নেতা থাকে। এই নেতা সাধারণত নারী লেমুর হয়। ঘ্রাণ শুঁকে শত্রুর শক্তি বের করার ক্ষমতা পুরুষদের চেয়ে নারীদের বেশি। তাই শত্রুদের দ্রুত সনাক্ত করে ফেলতে পারে নারী দলনেতা। সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।

 
Electronic Paper