স্বাস্থ্যবিধি নেই চা বাগানে ঝুঁকির মুখে শ্রমিকরা
মো. তোফাজ্জল হোসাইন, কমলগঞ্জ
🕐 ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২১
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন চলমান রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্প কারখানা, গার্মেন্টসহ সব প্রতিষ্ঠান। তবে সচল রয়েছে চা শিল্প। বাগানগুলোতে চলছে পুরোদমে চা উৎপাদনের কাজ। যেখানে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই কাজ করছেন প্রতিটি বাগানের চা শ্রমিকরা। এ অবস্থায় চা বাগানে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ২৩টি চা বাগান রয়েছে। উৎপাদনের মৌসুম হওয়ায় চা বাগানগুলোতে এখন পুরোদমে কাজ চলছে। কিন্তু মহামারীর এই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণকালেও চা বাগানগুলোতে নেই স্বাস্থ্যবিধি। নেই মাস্ক ব্যবহারের বালাই। এতে ঝুঁকির মুখে রয়েছেন চা শ্রমিকরা। ইতিমধ্যে চা বাগানগুলোতে একাধিক করোনা রোগীও শনাক্ত হয়েছেন, আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শ্রমিক নেতাও মারা গেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার ডানকান ব্রাদার্স, ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি) ও ব্যক্তি মালিকানাধীন চা বাগানগুলোতে পুরোদমে কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই কাজ করছেন শত শত চা শ্রমিক। মাঝে-মধ্যে দু-একজনের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও অধিকাংশ শ্রমিক মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। হাত ধোয়ার জন্য সাবান পানিরও কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। শ্রমিকদের বাড়ি থেকে নিজে পান করার জন্য বোতলে করা নিয়ে যাওয়া পানি দিয়েই দেখা গেছে কয়েকজনকে হাত ধুয়ে খাবার গ্রহণ করতে। তাদের প্রত্যেকেরই গা ঘেষাঘেষি করে পাতি উত্তোলন, ওজন ও গাড়িতে তুলে দিতে দেখা যাচ্ছে। এসব বিষয়ে তদারকি করতেও সংশ্লিষ্ট চা বাগান কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। কিছু কিছু স্থানে চা ছাত্র যুব পরিষদ ও যুবকরা নিজ উদ্যোগে নারী শ্রমিকদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে।
কয়েকটি চা বাগানের একাধিক চা শ্রমিক জানান, গতবছর করোনা মহামারীর প্রথম দিকে বাগান কর্তৃপক্ষ জনপ্রতি ১টি করে মাস্ক ও সাবান বিতরণ করে। বছরখানেক পেরিয়ে গেলেও নতুন করে দেওয়া হয়নি মাস্ক ও সাবান। ১টি মাস্ক ও সাবান কয়দিন ব্যবহার যায়Ñ এমন প্রশ্নও রাখেন তারা।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন (বাচাশ্রই) মনু-দলই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরী বলেন, চা শ্রমিকদের মধ্যে মাস্ক নেই। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ইতিমধ্যে চা বাগানের কিছু স্টাফও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থার মধ্যে মাস্ক ব্যবহার ব্যতীত ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে। শ্রমিকরা অনেক ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন। চা শ্রমিকদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করানোর কথা বললেও কর্তৃপক্ষ তোয়াক্কা করছেন না।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে শমশেরনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। আমরা কয়েক দফা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী শ্রমিকদের দিয়েছি।