ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আজমিরীগঞ্জে ফের সক্রিয় একাধিক বালু খেকো চক্র!

আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
🕐 ৭:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২১

আজমিরীগঞ্জে ফের সক্রিয় একাধিক বালু খেকো চক্র!

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক বালু খেকো চক্র। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে নদীর তীর, ফসলী জমি কেটে শেলো ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে ঐ চক্রটি।

স্থানীয় বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী চক্র উপজেলার সদর ইউনিয়নের পুরাতন গুচ্ছ গ্রাম সংলগ্ন খাস সরকারি ছড়া, কুশিয়ারার কালনী নদীর তীর থেকে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। বালু উত্তোলনে প্রতিটি এলাকায় আলাদা আলাদা প্রভাবশালীদের জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। এদের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। ফলে ফসলী জমি, নদীর তীরের আশপাশের এলাকার বসত ভিটা ও ফসল রক্ষার বেড়িবাঁধ নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও হাজার হাজার টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

জানা যায়, গত ৭/৮ দিন কয়েকটি প্রভাবশালী মহল আজমিরীগঞ্জের সদর ইউনিয়নের বিরাট পুরাতন গুচ্ছ গ্রামের সরকারি খাস জমির ছড়া, বদলপুর ইউনিয়নের পূর্ব পিটুয়ারকান্দি গ্রামের ফেরিঘাট সংলগ্ন কুশিয়ারার কালনী নদীর তীর থেকে অপরিকল্পিত ভাবে সরকারি কোন অনুমোদন ছাড়াই শেলো ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বড় গর্ত সৃষ্টি করে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করে আসছে। দিনে ও রাতের আঁধারে এসব জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করায় ইতিমধ্যে ফসলি জমি ও নদীর পাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে পিটুয়ারকান্দি গ্রামের ফসলিজমি ও জমির রক্ষার ভেরিবাঁধ।

সূত্রে আরও জানা যায়, ঐ বালু খেকো চক্রটি প্রতিদিন বালু উত্তোলন করে এলাকার সরকারি রাস্তা, নিচু জমি ভরাট করছে। এবং বালু ভরাটের জন্য প্রতি ঘনফুট বালু ৯ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করছে। এতে যেমন হাজার হাজার টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার ঠিক তেমনই অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে জমির শ্রেণী পরিবর্তনসহ নদী ভাঙ্গনের তীব্র আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরজমিনে আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বিরাট গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলজিডির রাস্তা থেকে গুচ্ছগ্রাম পর্যন্ত শেলো ড্রেজার মেশিন দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন।

এ সময় ড্রেজার মেশিন চালকের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, শিবপাশার বাসিন্দা ছুহুল আমীনের কাছ থেকে বালু উত্তোলনের জন্য মেশিনটি সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জসিম মিয়া এখানে নিয়ে এসেছেন।

এ ব্যপারে ইউপি সদস্য জসিম মিয়ার মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান-এটি সরকারি রাস্তা, রাস্তাটিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ভরাটের জন্য আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহেবের কাছে থেকে মৌখিক
অনুমতি নিয়েছি।

বদলপুর ইউনিয়নের পুর্ব পিঠুয়ারকান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কুশিয়ারার কালনী নদীর তীরে বড় গর্ত করে চলছে বালু উত্তোলন।

স্থানীয় কয়েকজনের সাথে আলাপকালে জানা যায়, পিটুয়ারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিছ মিয়া বালু উত্তোলন করে বাড়ির ভিটা ভরাট করার জন্য স্থানীয় কয়েকজনের নিকট বিক্রী করছে।

এ সময় সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দেখে সঠকে পড়েন তারা।

এ বিষয়ে কথা বলতে ইদ্রিস মিয়ার মুটোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে উনার ছেলে এরশাদ মিয়া কল রিসিভ করে বলেন, আমাদের ভুল হয়েছে। আমরা আর বালু তুলবো না বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মতিউর রহমান খাঁনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি। বিরাট এবং পিটুয়ারকান্দিতে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি শুনেছি, স্থানীয় ইউনিয়ন তহশিলদারকে পাঠিয়ে মেশিন বন্ধ করা হয়েছে। তবে পিটুয়ারকান্দি গ্রামের যে এড়িয়াটিতে মেশিন ছিলো এটি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার অন্তর্গত, তারপরও আমি শাল্লার ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করেছি।

 
Electronic Paper