ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাপ-দাদার আমলেও মিলেনি মাথা গোঁজার ঠাঁই!

মোঃ সহিবুর রহমান, হবিগঞ্জ
🕐 ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২১

বাপ-দাদার আমলেও মিলেনি মাথা গোঁজার ঠাঁই!

শেখ হাসিনা সরকার অনেক কিছুই দিতাছে। শুনলাম সরকার নাকি জায়গাসহ বিল্ডিং ঘর তুইলা দেয়। আমি কি ঘর পাওয়ার যোগ্য না। বাপ-দাদাও মানুষের জায়গাত থাকি মারা গেছে, আমিও মানুষের জাগাত থাকি, মানুষ যদি বাইর কইরা দেয় বাচ্চা-খাচ্চা লইয়া যামু কই, কোনো জায়গা জমি বলতে নাই আমার’ এভাবেই আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ১১নং ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের বাসিন্দা মরিয়ম চাঁন (৬০)। একান্ত আলাপকালে চোখে অশ্রু নিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

মরিয়ম চাঁন আরও বলেন, আমার বাপ ও দাদাও মানুষের বাড়িতে থাইকা মারা গেছে। আমিও অণ্যের বাড়িতে থাকি। ছোট থেকে বড় হয়েছি এখানেই। দিন আনি দিন খাই, কাম হলে খাই, না হলে উপোষ থাকি। এইযে করোনা গেছে সরকার সবাইরে চাইল-ডাইল দিছে। আমারে কেউ কিছু দিল না, কেউ খুঁজও নিল না।

চেয়ারম্যান-মেম্বাররা একটু খবরও নিছে না। সরকার না গরীব মানুষরে ঘর দিছে, আমারে কেউর চোখে পড়ে নাই। কেউ চোখ তুইলা থাকায় না।

মুজিব শতবর্ষে সারাদেশের ন্যায় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায়ও ভূমি ও গৃহহীন পরিবার ঘর পেলেও অনেকের ভাগ্যে তা জোটেনি।

স্থানীয়রা জানান, মরিয়ম চাঁনের সংসার খুব কষ্টে চলে। তার কোনো জায়গা জমি নেই। শুধু মরিয়ম চাঁন নয় তার বাপ-দাদাও অন্যের জমিতে বসবাস করে গেছেন। তার মা ভিক্ষা করে কোন রকম রকমভাবে খেয়ে না খেয়ে মারা গেছেন। সেও একইভাবে সংসার চালাচ্ছে। তার সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

মরিয়ম চাঁনের ছেলে খালেক বলেন, ‘আমরা মানুষের জায়গাত থাকি, ঘরও নাই জায়গাও নাই। আমরাও তো ঘর জায়গা পাওয়ার যোগ্য। কই আমরারে তো দিল না, নামও নিল না। কত ঠান্ডা গেছে, একটা কম্বলও কেউ দেয় নাই। আর ঘর তো দূরের কথা।’

৬০ বছরের মরিয়ম চাঁন দীর্ঘদিন ধরে কেশবপুর গ্রামে বসবাস করেন। কিন্তু সেখানে তার ভিটেবাড়ি কিছুই নেই। নিকটত্মীয় বলতেও কেউ নেই তার। কিন্তু কে রাখে কার খবর। কষ্টের মাঝেই দিন পার করছেন ভুমিহীন মরিয়ম চাঁন। পায়নি সরকারি কোন সুবিধা। মানুষের সহানুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে মরিয়ম চাঁনকে। মরিয়ম চাঁন জায়গা সহ একটি ঘর উপহার পাওয়ার দাবী জানান সরকারের কাছে।

১১নং ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য কামাল হাজারী বলেন, ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা আগে হয়েছে, এখন যদি আবার সুযোগ থাকে তবে অবশ্যই মরিয়মের নাম দেয়া হবে। আর ঈদ উপলক্ষে আমরা তাকে চাল ডাল দেয়ার ব্যবস্থা করবো।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ওই পরিবারটি ইউএনও বরাবর আবেদন দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 
Electronic Paper